নিজস্ব প্রতিবেদক: কুষ্টিয়া শহরের গড়াই নদী চর এলাকায় ত্রাণ ও ঔষধ পৌছানোর আবেদন জানিয়েছে এলাকাবসি। এলাকাবাসীর পক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য , জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এর নকিট খোলা চিঠি দিয়ে এ আবেদন করেছেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক সম্মিলিত সামাজিক জোট, কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক মুহাইমিনুর রহমান পলল।
তিনি তার খোলা চিঠিতে জানান এ এলাকার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর, দোকানদার, রিক্সা-ভ্যান চালক, পানি-বিদ্যুত মিস্ত্রী, গৃহপরিচিকা সহ নিম্নবিত্ত, দৈনিক নৈমিত্তিক আয়ের উপর নির্ভরশীল। এই এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্বও বেশি। প্রতিটি বাড়িতে কমপক্ষে ৪/৫ জন সদস্য রয়েছে গড়ে। কুষ্টিয়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডে আছে ১০৪৯ টি পরিবার। সুতরাং ধারণা করা যায় চর এলাকার শুরু হরিপুর ব্রীজের নিচ থেকে ঘোড়ার ঘাট পর্যন্ত নূন্যতম ৪০০০ পরিবার বাস করে, মোট জনসংখ্যা সম্ভব্য ১৫০০০। এদের মধ্যে মধ্যবিত্ত বা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল ও অন্যান্যদের তুলনায় ১০০০ পরিবারের ৪০০০ জন। তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও করোনা মোকাবেলায় প্রস্তুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলছে আল্লাহ পরীক্ষা নিচ্ছেন, তিনি ভাগ্যে যা রেখেছেন তাই হবে।
পলল তার চিঠিতে আরো জানান জন্মগত ভাবেই গড়াই পাড়েই বেড়ে ওঠা। বিগত ০৪-০৪-২০২০ তারিখে ২ নং ওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত থানাপাড়া চর এলাকায় ১৫০ পরিবারে করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সচেতনতা সৃষ্টি, হাত ধৌতকরণ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার পদ্ধতি ও স্যানিটাইজার বিতরণের কাজ করেছি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
০৯-০৪-২০২০ তারিখ পর্যন্ত তাদের কাছে কোনো সরকারি, বেসরকারি কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার খাদ্য সাহায্য, জরুরী ঔষধপত্র, ঝুকিপূর্ণ এলাকার উদ্দেশ্য গৃহীত বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মোটাদাগে তাদের করোনা প্রস্তুতি টেলিভিশন বা ফেসবুক নির্ভর। বাস্তবিক ধারণা খুবই কম। সম্মিলিত সামাজিক জোট কুষ্টিয়া ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ অঞ্চলে বিগত এক সপ্তাহ তাদের সচেতনতার জন্য মাইকিং করা হয়। সামনে ১৫ দিন পর পবিত্র রমজান আসন্ন। এই চর অঞ্চলের ৯৮ শতাংশ মানুষ মুসলিম। তাদের ইনকাম বন্ধ ২৫-০৩-২০২০ তারিখ থেকে। সঞ্চয় প্রায় শেষের পথে। এমতবস্থায় তাদের রমজানে নূন্যতম ইফতার, রাতের খাবার/সেহেরীর জন্য খাদ্য/ঔষধ পত্র সরবরাহের আবেদন করছি।
আমরা জেলা প্রশাসনের সহায়তার জন্য ইমারজেন্সি করোনা রেসপন্স টীমের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ২৫ শে মার্চ থেকে কাজ করে যাচ্ছি মাননীয় জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন, এনডিসি মুসাব্বিররুল ইসলাম ও সম্মিলিত সামাজিক জোটের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড.আমানুর আমান এর পরামর্শ ও দিক নির্দেশনায়। সর্বোচ্চ ঝুকি নিয়ে কুষ্টিয়ার এই পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য স্বেচ্ছাসেবকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করতে প্রস্তুত। তবুও সাধারণ সুরক্ষা সামগ্রী পেলে এই কাজ আরো ভালো ভাবে করা যেতে পারে। সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেষে একটি কথায় বলবো কোভিড-১৯ এমনই মহামারী আকারে ছড়াচ্ছে যা ইতিহাসে এর আগে এমন কখনো ঘটেনি। ধারনা করা যেতে পারে অসচেতন, স্বল্প শিক্ষিত চর অঞ্চলে যেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছেনা ঠিকমত, প্রশাসন উপস্থিত হলে কিছুটা দেখানোর জন্য ছাড়া। কিংবা কোনো বাড়তি প্রস্তুতি ছাড়াই এ অঞ্চলে যদি সংক্রামিত হয়, তাহলে পুরো শহর ছড়িয়ে পড়ার জন্য এই অসচেতন, নিম্নবিত্ত, অপ্রস্তুত মানুষগুলো অজ্ঞাতভাবে দায়ী থেকে যাবে। কারণ এরাই শহরের বাড়িগুলোতে গৃহপরিচিকার কাজ করছে। দোকানপাট, বাজারে সামগ্রীর ব্যবসা করছে ও রিক্সা-ভ্যান চালাচ্ছে সরকারি নির্সেশনা মেনে চলে এই লকডাউন অবস্থায়।
জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে মাননীয় এমপি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের মহোত্তম উদ্যোগ সমগ্র জেলা, বিভাগ তথা দেশব্যাপী ইতিমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের কাছে এই শহরের একজন সমাজ কর্মী হিসেবে আমার নিবেদন ২৫-০৪-২০২০ তারিখ প্রথম রমজান থেকে থানাপাড়া, কুঠিপাড়া ও আমলাপাড়া চর এলাকার দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি আরোপ সহ, অঞ্চল ভিত্তিক জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং খাদ্য ও ঔষধ সামগ্রী পৌছানোর জন্য বিনীত নিবেদন ও আকুল আবেদন করছি।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি