December 8, 2024, 4:12 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল

আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সুবর্ণজয়ন্তী

দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
আজ ১০ জানুয়ারি। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে রক্তার্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু। আর এর মধ্য দিয়েই পূর্ণতা পায় বাঙালির মহান বিজয়। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ বছর জাতির পিতার ‘ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’র ৫০ বছর পূর্তি তথা সুবর্ণজয়ন্তী।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। বন্দী করা হয় তাকে পাকিস্তানের কারাগারে। বাঙালি যখন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে, বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। কারাগারে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু যেখানে একটি প্রহসনমূলক মামলার মাধ্যমে তাকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছিল এবং সেই রায় কার্যকরের ক্ষণগণনা করছিলেন বঙ্গবন্ধু। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালিদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। আন্তর্জাতিক চাপে পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গণনা শেষে লন্ডন-দিল্লি হয়ে তিনি ঢাকায় পৌঁছেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি।
এরপর প্রতি বছর কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি নানা আয়োজনে পালন করে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। বঙ্গবন্ধু হানাদারমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন বিজয়ের মালা পরে। সেদিন বাংলাদেশে ছিল এক উৎসবের আমেজ। গোটা বাঙালি জাতি রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছিল কখন তাদের প্রিয় নেতা, স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি স্বাধীন দেশের মাটিতে আসবেন। পুরো দেশের মানুষই যেন জড়ো হয়েছিল ঢাকা বিমানবন্দর এলাকায়। বিমানবন্দর থেকে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পর্যন্ত রাস্তা ছিল লোকে লোকারণ্য। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু। দীর্ঘ ৯ মাস পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের গণহত্যার সংবাদ শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষণা দেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও আমি বাঙালি জাতির এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করে যাব।’ কথা রেখেছেন জাতির পিতা। হিংস পাক হানাদাররা যার গায়ে আঁচড় দেয়ারও সাহস দেখাতে পারেনি, স্বাধীন দেশে বাঙালি নামক একশ্রেণীর কুলাঙ্গার-বিশ্বাসঘাতকের হাতে তাকে জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বঙ্গবন্ধু তার কথা রেখে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিনটি সাড়ম্বরে পালন করবে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। এদিন পুরো জাতি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে/

১০ জানুয়ারি সকালে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশে সংগঠনের সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে আটটায় ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ১১ টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের সদস্য হলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সৈয়দ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস. এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এ বি এম রিয়াজুল করিব কাওছার, উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে তিনটায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমিত পরিসরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়াও স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুরূপ কর্মসূচির আয়োজন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের সকল কর্মসূচি যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সংগঠনের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
      1
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
      1
30      
1234567
891011121314
15161718192021
293031    
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net