=
শুভব্রত আমান \ কুষ্টিয়া
দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা গুলোর ‘কৃষি অঞ্চল’ খ্যাত ছয় জেলায় এই মৌসুমে রোপণকৃত আমন চাষ ভালো লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ভাল আবহাওয়ার কারনে এবার ফলনও ভাল হবে অন্যদিকে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় আমন চাষে কৃষকদের আগ্রহের কারনে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)-এর তথ্য অনুযায়ী, বিগত বছরের তুলানায় এ বছর ২৫৮ হেক্টরেরও বেশি জমি আমন চাষের আওতায় এসেছে। আশা করা হচ্ছে কৃষকরা ১৬ লাখ টন ধান উৎপাদনের প্রত্যাশা করবেন।
কৃষি বিভাগ জানাচ্ছে, এবার এই অঞ্চলে প্রতি হেক্টরে গড়ে ৩.৪৭১ টন ধান উৎপাদন হবে, যা গত মৌসুমে ৩.৪৯ টন ছিল। ডিএই-এর কর্মকর্তারা জানান, এ বছর কীটপতঙ্গের আক্রমণ ও রোগব্যাধি কম হওয়ায় কৃষকদের ব্যয়ও সাশ্রয় হয়েছে।
যশোরের ডিএই অতিরিক্ত পরিচালকের অফিসের সূত্র অনুসারে, তারা এই মৌসুমে ৪৫৯,৬৩৮ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। কৃষকরা অতিরিক্ত ২৫৮ হেক্টর জমি চাষের আওতায় নিয়ে এসেছে।
একই সাথে, বিগত দুই মাসে অপ্রত্যাশিত অবিরাম বৃষ্টির কারণে পানি জমে যাওয়ায় ২৭১ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ বছর ছয় জেলার মধ্যে সবোর্চ্চ পরিমাণ রোপা আমনের চাষ হয়েছে যশোর জেলায়। সেখানে ১৪০,২৯৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এরপর রয়েছে ঝিনাইদহ। সেখানে চাষ হয়েছে ১০৪,৪৮৮ হেক্টর।
ডিএই-এর তথ্য অনুসারে, মাগুরায় ৬২,২১৬ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ৮৮,৯২০ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় ৩৬,৭১০ হেক্টর এবং মেহেরপুরে ২৬,৮৬০ হেক্টরে টি-আমন চাষ করা হয়েছে।
এই অঞ্চলের কৃষকরা প্রায় ১০ দিন আগে টি-আমন ধান কাটতে শুরু করেছেন। ডিএই-এর সূত্রমতে, ইতোমধ্যে প্রায় ২৩,৬৩৬ হেক্টর (৫%) জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি উপজেলার গোয়ালগ্রামের কৃষক এইচএম আলী হাসান এবারের আমন চাষে তার সন্তুষ্টির কথা জানান। তিনি বলেন, এবারের আমন ধানের দানা পাকা ও ঘন হয়েছে। ধানের শীষে চিটাও কম হয়েছে। এসব কারনে ধানের দাম ভাল পাওয়াে যাবে।
মেহেরপুরের কৃষক আলীনূর হোসেন জানান, কোন রকম বাধা-বিঘœ ছাড়াই এবার বিঘাতে কুড়ি থেকে ২১ মন ধান হয়েছে। এটা একটা চমৎকার ব্যাপার। ধানের ছড়াগুলো পুষ্ট ও ধানও গোটা গোটা। তাছাড়া, ধানে তেমন কীটপতঙ্গের আক্রমণ বা রোগ হয়নি, যা আংশিকভাবে তাদের উৎপাদন খরচ কমিয়েছে বলে জানান এই কৃষক।
এদিকে, এবার কৃষকরা ধান কাটার পর সন্তোষজনক লাভের আশা করছেন খড় বিক্রয় থেকে। যাকে বলা হয় বিছালি। এবছর গরুর খামারীরা ইতোমধ্যে আগাম দাম দিচ্ছেন খড়ের।
প্রতি বিঘা থেকে ধানের খড় বিক্রি করে একজন কৃষক প্রায় ৫,০০০ টাকা পেতে পারেন, যা ধানের দামের প্রায় ২০% থেকে ২৫%।
যশোর অঞ্চলের ডিএই-এর অতিরিক্ত পরিচালক দীপক কুমার রায় জানান, যশোর অঞ্চলের ছয়টি জেলার কৃষকরা রোপা ধান থেকে এবার সবদিক দিয়েই ভাল লাভবান হবেন। তিনি বলেন, পোকার আক্রণ বিহীন ভাল ফলনের জন্য তিনি অধিক বৃষ্টিকে আর্শীবাদ হিসেবে দেখেছেন।
তিনি জানান তারা সবসময় আধুনিক প্রযুক্তি, পরামর্শ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়ে এসেছেন। মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক প্রয়োাজনে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগাম খেতগুলোতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান আহরণ ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন ধান এবং খড়ের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা এ মৌসুমে উপকৃত হবেন।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি