দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
গত ২৫ দিনে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৫,০০০ টন ছোলা আমদানি হয়েছে, যা ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজারে পৌঁছেছে। এই পণ্যটির আমদানি এখনো শুল্কমুক্ত রয়েছে।
তবে, আমদানি বৃদ্ধির পরও রমজানের আগের উচ্চ চাহিদার কারণে প্রত্যাশিত হারে দাম কমেনি বলে সূত্র জানিয়েছে।
হিলি কাস্টমস স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম জানান, চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত ১৫০টি ট্রাকে ৫,৫০০ টন ছোলা আমদানি হয়েছে। আমদানি করা ছোলা দ্রুত গুণগত মান যাচাই ও কাস্টমস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছাড় করা হচ্ছে।
বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, ছোলা আমদানিতে কোনো শুল্ক না থাকায় ব্যবসায়ীরা আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছেন। রমজানকে সামনে রেখে আমদানি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা জানান।
সূত্র জানায়, আগে হিলি বন্দর দিয়ে প্রতিদিন মাত্র দুই-তিনটি ট্রাকে ছোলা আমদানি হতো। এখন এই সংখ্যা বেড়ে প্রতিদিন ২০-২৫ ট্রাকে পৌঁছেছে। আমদানি করা ছোলার একটি বড় অংশ বন্দরের সরাসরি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে।
বন্দর ব্যবসায়ীদের মতে, আগে বন্দরে পাইকারি (ট্রাক বিক্রয়) মূল্য ছিল প্রতি কেজি ৯৮-৯৯ টাকা, যা এখন কমে ৯৪ টাকায় নেমে এসেছে।
তবে, দাম কমার পরও ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন রয়েছেন। তাদের ধারণা, রমজান ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা আরও বাড়বে, যা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী শাহেদ হোসেন জানান, দেশব্যাপী পাইকারি বাজারে ছোলার চাহিদা বাড়ছে, তাই তিনি হিলি থেকে ছোলা সংগ্রহ করতে এসেছেন।
তিনি বিভিন্ন বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, কাজীর দেউড়ি, কালুরঘাটসহ বিভিন্ন বাজারে ছোলার খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ১০৫ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।
হিলি বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার বুকিং মূল্য প্রতি টন ৬২০ থেকে ৬৪০ মার্কিন ডলার। যেহেতু ছোলা ও অন্যান্য ডালের আমদানি শুল্কমুক্ত রয়েছে, তাই দেশীয় বাজারে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যের কারণে বাজার স্থিতিশীল হতে সময় লাগছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, ভারত থেকে আমদানিকৃত ছোলার দাম বাংলাদেশে প্রতি কেজি ৮০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।
এছাড়া, আমদানিকৃত ছোলার একটি বড় অংশ এখনও পাইকারদের কাছ থেকে খুচরা বাজারে আসেনি, যার ফলে দাম কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমছে না। পাইকারি ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের ধারণা, সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে ছোলার দাম আরও ১০-১২ টাকা কমতে পারে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক মোস্তাফিজুর রহমান ডেইলি সানকে জানান, বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভারত থেকে ছোলা আমদানি অব্যাহত রাখা হচ্ছে। এছাড়া, ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র (এলসি) সরবরাহ করছে, যা লেনদেনকে সহজ করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আমদানির গতি বজায় থাকলে আগামী সপ্তাহগুলিতে পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে, ফলে রমজানে মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা কমবে।
এ বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে কোনো আমদানি হয়নি
অন্যদিকে, এ বছর এখন পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে কোনো ছোলা আমদানি হয়নি।
তবে, গত বছরের মার্চ মাসে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২,০০০ টন ছোলা আমদানি করেছিল। সে সময় আমদানি মূল্য ছিল প্রতি কেজি ৮৫ টাকা, এবং বাজার স্থিতিশীল রাখতে টিসিবি ছোলাটি ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিল।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি