July 1, 2025, 11:09 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
ভাইসহ কুষ্টিয়ার সাবেক আওয়ামী লীগ এমপি রেজাউলের ১৪ ব্যাংক হিসাব জব্দ স্বৈরাচারের লক্ষণ দেখা মাত্রই যেন বিনাশ করতে পারি এই হোক জুলাইয়ের শিক্ষা: প্রধান উপদেষ্টা বিবিসি/কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের জন্যই নতুন করে চালু হচ্ছে কোটা?, কথা বলেছেন নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা/পেট্রাপোলে মন খারাপ ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে বিতর্ক, কারচুপির অভিযোগ ও সিলমারা ব্যালট উদ্ধারের ঘটনা কুষ্টিয়ায় সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ কুষ্টিয়া পৌর বিএনপি’র নির্বাচনের ফলাফল কুষ্টিয়ায় মাদক ব্যবসায়ী প্রতিপক্ষকে কুপিয়ে হত্যা জাপানের ৭ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা লোনে হচ্ছে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়াল রেলপথ এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন/যশোর বোর্ডে অনুপস্থিত ১ হাজার ৬৩৮ জন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনগড়া নীতিমালা/উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা!

comilla university

সুত্র, দেশ রুপান্তর/

উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কর্মচারী হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার পর ‘মনগড়া নীতিমালায়’ পদোন্নতি পেয়ে কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি)। আর এই সুযোগ ব্যবহার করে ইতিমধ্যে কর্মকর্তা হয়েছেন ২ ডজনেরও বেশি কর্মচারী। এমনকি ওই নীতিমালা অবলম্বন করে রয়েছে কর্মচারী থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার হওয়ার সুযোগও। এছাড়া একই সুযোগে কর্মকর্তা হতে পারবেন মাধ্যমিক পাস করে চাকরি নেওয়া চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরাও। বিগত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ তার মেয়াদকালে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী কর্মচারীকে সুবিধা দিতেই এমন অস্বাভাবিক নীতিমালা তৈরি করেন বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চাকরি বিধিমালায় প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পদে আবেদনের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রভেদে ন্যূনতম স্নাতক বা স্নাতকোত্তর যোগ্যতা থাকতে হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এখানে অস্বাভাবিক এক নীতিমালার মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা কর্মচারী থেকে কর্মকর্তা হচ্ছেন অনেকে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির পদে চাকরিতে ঢোকেন তারা। কিন্তু চাকরি চলাকালীন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট জমা দিয়ে কর্মকর্তা হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কর্মচারী। একই পদ্ধতি অবলম্বন করে মাধ্যমিক পাস করে চতুর্থ শ্রেণিতে চাকরি নেওয়া কর্মচারীরাও হতে পারবেন কর্মকর্তা। যেখানে সর্বমোট তিনটি পদোন্নতি নিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে তাদের চাকরিজীবন শেষ করার কথা। সেখানে ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট দেখিয়ে মনগড়া নীতিমালার আশীর্বাদে সহকারী রেজিস্ট্রার পর্যন্ত হতে পারবেন এই কর্মচারীরা।

স্বাভাবিক নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা পদে যোগদানকারীদের অভিযোগ, বিগত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ ৫২তম সিন্ডিকেট সভায় নীতিমালা সংশোধনের নাম করে কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী কর্মচারীকে বিশেষ সুবিধা দিতে নিজের মনগড়া এমন সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু এমন নজির অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কর্মচারী থেকে পদোন্নতি পেয়ে কর্মকর্তা হওয়াদের অধিকাংশেরই শিক্ষাজীবনের ফলাফল খুবই নিম্নমানের। এছাড়া ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট এনে কর্মকর্তা হবেন এমন আশায় থাকা কর্মচারীদের ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ পালনেও কাজ করে অনীহা। এছাড়া তাদের পদের বিপরীতে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে আবেদন করেও চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন যোগ্য প্রার্থীরা।

এদিকে বর্তমান উপাচার্য অস্বাভাবিক এমন বিধিমালা পরিবর্তন না করে উল্টো প্রথম শ্রেণির সেকশন অফিসার পদে আবেদনকারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির ৭১তম সিন্ডিকেট সভায় সেকশন অফিসার পদে আবেদন করা ১২ জনকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে তাদের আবেদনকৃত পদে নিয়োগ না দিয়ে সেসব পদে ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট জমা দেওয়া অনেক কর্মচারীকে পদোন্নতি দিয়ে সেকশন অফিসার বানানো হয়। ফলে অধিকতর যোগ্যতাসম্পন্নরা বঞ্চিত হন। সে সময়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পাওয়া এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের হাইকোর্টে রিট করার কথা ছিল। কিন্তু করা হয়নি। এখন ভাবছি আমাদের অধিকার আদায় করতে হলে তা করতে হবে।’

এমন অস্বাভাবিক নীতিমালার প্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ গুণগত মান নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গুঞ্জন রয়েছে, এমন সুযোগ থাকায় ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট আনার হিড়িক পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মাঝে। আর কর্মচারী থেকে কর্মকর্তা হওয়া ব্যক্তিদের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাদের চেয়ে নিম্নপদে থাকা অধিকতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্নরা। এমনই এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের ওপরের পদে হলেও অনেক সময় তাদের কাজ আমাদের করে দিতে হয়। কারণ তারা অনেক কিছুই বুঝেন না। এটা খুবই বিব্রতকর। এ নিয়ে কর্মকর্তা পরিষদের নেতাদের মাঝে চরম মাত্রায় অসন্তোষ থাকলেও নির্বাচনে ভোট হারানোর ভয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে নারাজ তারা।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি জিনাত আমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখানে অনার্স এবং ডিগ্রির একটা পার্থক্য রাখা দরকার ছিল, যেটা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। কিন্তু তা আমরা করিনি। কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছি, কিন্তু এটা বন্ধ করতে পারিনি।’

এসএসসি বা এইচএসসি পাসদের কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির অস্বাভাবিক নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এই নীতিমালা আমার সময় করা হয়নি। আমরা এটা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠাব। প্রয়োজন হলে সিন্ডিকেটে তুলে সঠিক ব্যবস্থা নেব।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net