November 21, 2024, 12:26 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
যশোর বোর্ডে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নে ৬৬ হাজার ৫৮টি বেশি আবেদন পড়েছিল। এর মধ্যে ফল পরিবর্তন হয়েছে মাত্র ৭১ জনের।
আবেদনকারীদের মধ্যে নতুন করে ১৭ জন এ প্লাস পেয়েছে। আর ফেল থেকে পাস করেছে ২৭ জন।
বোর্ড সূত্র জানায়, ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে ৬৬ হাজার আবেদনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আবেদন পড়ে ইংরেজিতে। যশোরে শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক আবেদন জমা পড়ে বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান।
এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সারাদেশে আটটি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে যশোর বোর্ডের অবস্থান ভাল ছিল না। অনেক নতুন শিক্ষাবোর্ড যশোর বোর্ডকে পেছনে ফেলে দিয়ে উপরে উঠে আসে। এই বোর্ডে পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৪.২৯ শতাংশ।
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিভাগ জানায়, বাংলা প্রথম পত্রে পাঁচ হাজার ২৯৪, দ্বিতীয় পত্রে পাঁচ হাজার ২৯৪, ইংরেজি প্রথম পত্রে ১৮ হাজার ৯৫১, দ্বিতীয় পত্রে ১৮ হাজার ৯৫১, অর্থনীতি প্রথম পত্রে ৯২, দ্বিতীয় পত্রে ৯২, সমাজ বিজ্ঞান প্রথম পত্রে ৩০, দ্বিতীয় পত্রে ৩০, যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রে ৮৯, দ্বিতীয় পত্রে ৮৯, মনোবিজ্ঞান প্রথম পত্রে পাঁচ, দ্বিতীয় পত্রে পাঁচ, ভূগোল প্রথম পত্রে ৮৮, দ্বিতীয় পত্রে ৮৮, পরিসংখ্যান প্রথম পত্রে এক, দ্বিতীয় পত্রে এক, আরবি প্রথম পত্রে এক, দ্বিতীয় পত্রে এক, পদার্থ বিজ্ঞান প্রথম পত্রে তিন হাজার ৯৮৯, দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার ৯৮৯, রসায়ন প্রথম পত্রে ২১, দ্বিতীয় পত্রে ২১, জীব বিজ্ঞান প্রথম পত্রে ২০, দ্বিতীয় পত্রে ২০, কৃষি শিক্ষা প্রথম পত্রে ২১, দ্বিতীয় পত্রে ২১, ইসলাম শিক্ষা প্রথম পত্রে ১৯, দ্বিতীয় পত্রে ১৯, হিসাব বিজ্ঞান প্রথম পত্রে ৬৪৭, দ্বিতীয় পত্রে ৬৪৭, উচ্চতর গণিত প্রথম পত্রে ৩৩, দ্বিতীয় পত্রে ৩৩, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রথম পত্রে ৫০, দ্বিতীয় পত্রে ৫০, পৌরনীতি ও সুশাসন প্রথম পত্রে ১০০, দ্বিতীয় পত্রে ১০০, সমাজ কর্ম প্রথম পত্রে ৩০, দ্বিতীয় পত্রে ৩০, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান প্রথম পত্রে সাত ও দ্বিতীয় পত্রে সাত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ছয় হাজার ৯৭৪, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা প্রথম পত্রে পাঁচ ও দ্বিতীয় পত্রে পাঁচ, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও মার্কেটিং প্রথম পত্রে ১৩ ও দ্বিতীয় পত্রে ১৩, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং এবং ইন্স্যুরেন্স প্রথম পত্রে ১২ ও দ্বিতীয় পত্রে ১২, ইতিহাস প্রথম পত্রে ২৪ ও দ্বিতীয় পত্রে ২৪ টি আবেদন জমা পড়ে।
যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে এ বছর এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে পাস করে ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন।
গত চার বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যশোর শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসিতে ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৮.১১। ২০২২ সালে ৮৩.৯৫, ২০২৩ সালে ৬৯.৮৮ ও ২০২৪ সালে ৬৪.২৯ শতাংশ।
বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ডকুমেন্ট) রেজাউল ইসলাম জানান, পুনর্মূল্যায়নে আবেদন ও ফলাফলে বড় পার্থক্য দেখা দিয়েছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ তো আগেই জানিয়েছিল এবার ইংরেজিতে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। সেখানে আবেদন করে পুনর্মূল্যায়নেও ফল পরিবর্তনের সুযোগ ছিল না।
এদিকে, সময় যত যাচ্ছে যশোর শিক্ষা বোর্ডে পাসের হারে ততটায় হতাশা তৈরি করছে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে।
যশোর বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে এমন বেশ কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বলা হলে তারা নাম প্রকাশে রাজী না হয়ে জানান, শিক্ষা প্রশাসন, শিক্ষা নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষা পর্যবেক্ষণসহ বেশ কিছু বিষয়ে বোর্ডে বিগত সময়ে নানা নৈরাজ্য বিরাজ করে। সীমাহিন দূর্ণীতি তৈরি হয় বোর্ডের বিভিন্ন কার্যক্রমে। যার কারনে বিগত দুটি এইচএসসি পরীক্ষায় বোর্ডে ভয়ানক ফল বিপর্যয় ঘটে।
ইতোমধ্যে, নানা অভিযোগে বোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকুরীচ্যূত করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি দমন কমিশনে মামলা চলছে।
শিক্ষা সচেতনরা এখনই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছেন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে।
Leave a Reply