August 6, 2025, 5:08 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থান নিয়ে দেশজুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও কৌতূহল। তিনি ভারতে রয়েছেন—এটা একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হলেও দেশটির কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে দেশে হাসিনা উৎখাাতের বছর উদযাপন চলছে, তখন তাকে নিয়ে, তার অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে কৌতুঞর এখন চাঙ্গা।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন শেখ হাসিনা। প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তার সরকারের পতন ঘটে। এরপরই তিনি গোপনে ভারতে আশ্রয় নেন বলে জানা যায়। ভারত সরকার তার অবস্থান অস্বীকার না করায় ধারণা আরও দৃঢ় হয়।
ভারতের প্রতিক্রিয়া ও অবস্থান/
২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল জানান, “বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষার কারণে অল্প সময়ের নোটিশে ভারতে এসেছেন এবং এখনও সেভাবেই রয়েছেন।”
পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় পার্লামেন্টে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হয়। তবে ভারত এখনো তাকে ফেরত পাঠানোর কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
কোথায় আছেন শেখ হাসিনা?
তার অবস্থান ঘিরে একাধিক সূত্রে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে—উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থান কিংবা কলকাতা। কেউ বলছেন, তিনি দিল্লির লোধি গার্ডেনের লুটেনস বাংলো জোনে একটি সুরক্ষিত বাসভবনে রয়েছেন। ২০২৪ সালের অক্টোবরে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছিল।
সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আছেন, বাইরে গেলে প্রটোকল অনুসরণ করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে তার চলাফেরার বিষয়েও ভারত সরকার কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করছে।
পরিবার ও দলের সঙ্গে যোগাযোগ/
ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা নিয়মিত দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ফোন ও সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন। যদিও তার ভিডিও প্রকাশ না করার বিষয়ে কঠোর নির্দেশ রয়েছে। ধারণা করা হয়, অবস্থান গোপন রাখতেই এই সতর্কতা।
তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় গত জুনে দিল্লিতে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন বলে একটি সূত্র জানায়। এছাড়া শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও ভারতে অবস্থান করছেন।
সায়মা ওয়াজেদ ও বিতর্ক/
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক পদে থাকা সায়মা ওয়াজেদকে ১১ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুদক দুটি মামলা করে।
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও অনিশ্চয়তা/
ভারতে অবস্থানকালীন শেখ হাসিনা কী ধরনের রাজনৈতিক পরিকল্পনা করছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, কলকাতায় দলীয় নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে তিনি দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
এক বছর পেরিয়ে গেলেও শেখ হাসিনার অবস্থান স্পষ্ট নয়। ভারত সরকার নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। তার অবস্থান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, দেশে ফেরার সম্ভাবনা—সব কিছুই এখন জল্পনা-কল্পনার বিষয়। তবে এটা নিশ্চিত, তিনি এখনো ভারতে আছেন এবং ভারতের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই তার দিন কাটছে।
Leave a Reply