October 29, 2025, 12:32 am

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি–রফতানির আগের কার্যক্রম পুনরায় চালুর মাধ্যমে বাণিজ্য আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে বেনাপোল–পেট্রাপোল স্থলবন্দরে পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্নে শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলেছে।
নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, এখন সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এবং কাঁচামালবাহী ট্রাক সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে।
বন্দর ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মতে, আজ (সোমবার) থেকে এই সময়সূচি অনুযায়ী আমদানি–রফতানি কার্যক্রম চলবে।
এর আগে ২০১৭ সাল থেকে বন্দরটি ২৪ ঘণ্টা চালু ছিল।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রোববার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে জানায়—বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি–রপ্তানি পণ্যের প্রবেশ–বহির্গমনে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কোনো নতুন আদেশ বা বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। পূর্বের ন্যায় যথানিয়মে আমদানি–রফতানি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়া গত বৃহস্পতিবার থেকে সন্ধ্যা ৬টার পর সব ধরনের আমদানি–রফতানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বেনাপোল কাস্টমস। এতে সীমান্তজুড়ে ট্রাকের দীর্ঘ সারি, ব্যবসায়ী–আমদানিকারক–রফতানিকারকদের চরম ভোগান্তি ও বাণিজ্যে বড় ধাক্কা লাগে।
রোববার বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়।
অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি কামাল উদ্দিন শিমুল সোমবার জানান—বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে।
চোরাচালান ও কাগজপত্রবিহীন পণ্য প্রবেশ ঠেকাতে কাস্টমস প্রথমে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কিন্তু এর ফলে নজিরবিহীন অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়ে দেশীয় ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বড় ঝুঁকিতে পড়ে। ব্যবসায়ীদের হিসাবে, প্রতিদিন গড়ে ৪০০–৪৫০ ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করলেও নিষেধাজ্ঞার সময়ে তা নেমে আসে মাত্র ১৮০–২০০ তে।
এ পরিস্থিতিতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি পৃথক বিবৃতিতে ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। নেতারা বলেন—এ ধরনের সিদ্ধান্ত দেশের সামগ্রিক বাণিজ্য প্রবাহ ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
যশোর চেম্বার সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, এ সিদ্ধান্ত ছিল “চরম হঠকারী ও অবিবেচনাপ্রসূত।” তিনি বলেন—দেশের সর্বাধিক বাণিজ্য হয় যে বন্দরে, সেখানে ব্যবসায়ীদের না জানিয়ে এমন পদক্ষেপ কেন নেওয়া হল তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
ভবিষ্যতে বাণিজ্য–সম্পৃক্ত যে কোনো নীতি পরিবর্তনের আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন জানান—দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোরাচালানের পরিমাণও বাড়ছে, যা নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
আমান/