November 22, 2024, 5:54 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
ঈদের ভাষায় যাকে বলে চাঁদ রাত। এই রাতটা মুরাদ আলীর কাছে বিগত বছগেুলোতে এরকম ছিল না। ছির সবসময়ের মতোই পাংশুটে, নিরানন্দ। হবেই না বা কেন। চুয়াত্তর চলছে। একদিকে বয়সের ভার , অন্যদিকে সীমাহিন অনটন। ঘর নেই, যা আছে তা একেবারে ছিন্নমুল। ২০১২ সাল থেকে শরীর প্যারালাইজড হয়ে আছে। কথা বলতেও পারেন না ঠিক মতো। তারপরও এবারের ঈদ মুরাদ আলীকে দিয়েছে এক অন্যরকম আনন্দ।
আনন্দটি হলো একটি ঘর পাওয়ার আনন্দ। এ ঘরটি তাকে দিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১২)। মুরাদ আলীর বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের অঞ্জনগাছী গ্রামে।
২০২৯ সারে প্রকাশিত একটি সংবাদে র্যাব মুরাদ সম্পর্কে অবগত হয়। তারপর র্যাব খোঁজ খবর নেয়। একটি ঘর নির্মাণ করে দেয় র্যাব।
জানা যায় বৃদ্ধ মুরাদ আলী ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি মনে করতে পারেন তিরি যাদের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন তাদের নাম। তিনি নামও বলেন অনেকের। যেমন অঞ্জনগাছী গ্রামের আজগর, পিয়ার, নূর হোসেন, ইনতাজ, ইয়াকুব, সাদেক, আবুল, আইনাল, মনছুর, শের আলী। যাদের সাথে তিনি রণাঙ্গনে চিলেন।
“আমার যুদ্ধের সাথীরা এখন সরকারী ভাতা পায়। কিন্তু দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আমার ভাতা হয়নি। সকলের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় থাকলেও আমার নাম নাই,” জানান এই বৃদ্ধ।
স্ত্রী, ৪ মেয়ে ও ১ ছেলের সংসার তার। বৃদ্ধকালে অসহায় হয়ে স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে নিয়ে ঠাই হয়েছিল কুঁড়ে ঘরে। অনেক কষ্টে এক ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, সেও ঘর জামাই। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক।
মুরাদ জানান হঠাৎ একদিন র্যাব সদস্যরা এসে তাকে নতুন ঘর করে দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বিশ^াসই করতে পারেননি। পরে র্যাব সদস্যরা এই দুই একটি দুই রুম বিশিষ্ট ঘর তুলে দেন।
শনিবার (২৩ মে) সকালে র্যাবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ঘর মুরাদ আলীকে হস্তান্তর করেন র্যাব-১২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।
এ সময় র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সজল কুমার সরকার, জেলা পরিষদের সদস্য হারুন অর রশিদ মামুন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাব-১২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম বলেন, এটি মুরাদ আলীর জন্য একটি যৎসামান্য প্রতিদান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের একজন বীর সেনানী
নতুন ঘর পেয়ে খুশী মুরাদ আলীর পরিবার। তা স্ত্রী ফেরদৌসী জানান নতুন ঘর পেয়ে খুবই খুশি আমরা।’ মুরাদ আলীর মেয়ে মরিয়মও নতুন ঘর পেয়ে খুশি।
মৃত্যুর আগে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সম্মান চান মুরাদ আলী।
অসহায় মুরাদ আলীকে র্যাবের পক্ষ থেকে নতুন ঘর করে দেওয়ায় সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
Leave a Reply