August 3, 2025, 1:02 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পরও কুষ্টিয়ায় তরমুজের দাম কমেনি

জাহিদুজ্জামান/
কুষ্টিয়ায় তরমুজের আড়তে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পরও দাম কমায় নি ব্যবসায়ীরা। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্রেতারা কেজিপ্রতি ৫০ টাকা দাম নিচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৬ এপ্রিল চার তরমুজ ব্যবসায়ীকে মোট ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ক্রেতারা বলছেন, আড়তদাররা দাম বাড়িয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা তুলছেন, তাদের কাছে ২/৩ হাজার টাকা জরিমানা কোন বিষয়ই না। কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তাদের।

কুষ্টিয়ায় রমজানের এক সপ্তাহ আগেও তরমুজ ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সেসময় তুলনামূলক বড় ও ভাল মানের তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২৭ থেকে ৩০ টাকায়। রমজান শুরু আগেই দাম বেড়ে ৩৫/৪০ এ চলে যায়। এভাবে বাড়তে বাড়তে তরমুজের কেজি ৫০ থেকে ৫৫তে দাঁড়ায়। লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় সারাদেশের মতো কুষ্টিয়াতেও হৈ চৈ পড়ে যায়। এরপরই কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বনি আমিন ও রিজু তামান্না ২৬ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে অভিযান পরিচালনা করেন। ম্যাজিস্ট্রেট মো. বনি আমিন বলেন, কেজিপ্রতি ২০ টাকাও লাভ করেছেন কেউ কেউ। এদের চারজন ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামকে ২ হাজার টাকা, আবদুস সামাদকে ৩ হাজার টাকা, জামান ট্রেডার্সের মো. রবিউল ইসলামকে ৩ হাজার টাকা এবং মনিরুল ইসলামকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কৃষি বিপনন আইন ২০১৮ এর ১৯ এর ১ এর ঙ ধারায় তাৎক্ষণিক সব জরিমানা আদায় করা হয়।
এ আড়তগুলো কুষ্টিয়া পৌর বাজারের সামনে। জরিমানা আদায়ের পরও এসব আড়তে পাইকারী ও খুচরা উভয় ক্ষেত্রেই বাড়িয়ে দেয়া দামে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কুষ্টিয়ার আড়তে তরমুজ বিক্রি করতে এসেছেন, ব্যবসায়ী আজগর আলী। তিনি খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকায় তরমুজের চাষও করেন। বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজ বড় হয়নি। তাই, কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। আজগর বলেন, কুষ্টিয়ার আড়তে ৩৫ টাকা কেজি ছোট তরমুজ পাইকারী বিক্রি করলাম। আর বড়গুলো বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা কেজি। আল্লার দান ফল ভা-ারে বসে কথা বলছিলেন তিনি। এই আড়তের মালিক তিন জনের একজন সলক ব্যাপারী বলেন, তরমুজ পাওয়ায় যাবে আর ১ সপ্তাহ। দাম আর কমবে না। তিনি ছোট তরমুজ ৪০ আর বড় তরমুজ ৫০ টাকা দরে বেচছেন। পাশের আড়ত জনতা ফল ভান্ডারে হোয়াইট বোর্ডে তরমুজের দাম লিখে রাখা হয়েছে। ছোট ৪০, বড় ৫০। এই আড়তের বয়স্ক ব্যবসায়ী জালাল শেখ বলেন, আমরা দাম কমাতে পারছি না। কেনা পড়ছে বেশি। গতকাল কম দামে মাল বেচতে গিয়ে ৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে বলেন জালাল।
শহরের মজমপুরের নিউ বিনিময় ফল ভান্ডার এর বিক্রেতা (নাম বলতে চাননি) বলেন, আগে থেকেই ৫০ টাকা করে বিক্রি করছিলাম। এখনো তাই। তিনি বলেন, আড়ত থেকে কিনে আনছি ৪৫ করে।
হাসপাতালের সামনের ফলের দোকানী মো. আইনুল রসিদ দেখিয়ে বলেন, আড়ত থেকে ১৭৫০ টাকা মণ কিনেছেন। অন্য খরচ দিয়ে ৪৫ টাকা পড়ে। ৫০ টাকা না বেচে উপায় নেই।
তরমুজের ভোক্তা ও কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির সদস্য ড. আমানুর আমান বলেন, এভাবে ২/৩ হাজার টাকা জরিমানা করে কোন লাভ হবে না। কারণ একেক জন তরমুজ ব্যবসায়ীর প্রতিদিনের অতিরিক্ত আয়ের তুলনায় এই জরিমানা খুবই নগন্য। তিনি বলেন, নিয়মিত মনিটরিং-এর মধ্যে রাখতে হবে তাদের। ব্যবসায়ী সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে সার্বক্ষণিক মনিটরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে আড়ৎ সিলগালা করে দিতে হবে। ৭দিন আড়ৎ বন্ধ থাকলে এরা ঠিক দামে বিক্রি করতে সম্মত হবে।
কথা হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অংশ নেয়া কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলামের সঙ্গে। অভিযানের পরও একই দামে বিক্রি হচ্ছে জানালে তিনি বলেন, আবারো অভিযান করা হবে। নিয়মিত খোঁজ রাখছি বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫টাকার বেশি লাভ করতে পারবেন না। আর কেজি বা পিস যেভাবেই কিনবে সেভাবে বেচতে হবে।
পাশের জেলা মেহেরপুরের গাংনীতে পৌরসভার উদ্যোগে তরমুজ কিনে সস্তায় বিক্রি করা হয়েছে। পৌরসভা ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করায় সিন্ডিকেট ভেঙ্গে পড়েছে। ব্যবসায়ীরাও এখন আর ৬০ টাকা কেজি বেচতে পারছেন না।
সোস্যাল মিডিয়ায় এই সংবাদ দেখে একই ব্যবস্থা কুষ্টিয়ার জন্যও দাবি করেছেন ভোক্তারা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net