December 23, 2025, 2:47 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, টানা দুই দিন সূর্যের দেখা নেই ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কমের মধ্যেও রপ্তানি ও রাজস্ব বৃদ্ধি লাখো মানুষের শ্রদ্ধায় শেষ বিদায়/ চিরনিদ্রায় শহীদ ওসমান হাদি কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিসে অগ্নিকাণ্ড, তদন্তে প্রশাসন শোকবার্তায় জামায়াত /আওয়ামী লীগের প্রতিবিপ্লবের অপচেষ্টা রুখে দেওয়ার কারিগর ছিলেন হাদি’ মব সন্ত্রাসে জাতি বিভক্ত, দায় সরকারের: মির্জা ফখরুল সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান সরকারের জুলাই–অক্টোবরে বাণিজ্য ঘাটতি ৭.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে অন-ডিউটি চিকিৎসকের মোবাইল গেম খেলা/ দুদকের অভিযানে মিলল সত্যতা, আরও অভিযোগ আজ মহান বিজয় দিবস/বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সংগ্রাম ও বিজয়ের গৌরবগাথা

কুষ্টিয়ার শ্রমিকের হাটেও কাজ নেই, কাজ চান শ্রমিকরা

জাহিদুজ্জামান/

কুষ্টিয়া শহরে বসা শ্রমিকের হাটে কর্মহীনদের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনই কাজ না পেয়ে হাট থেকে ফিরে যাচ্ছেন দুই-আড়াই শ মানুষ। মে দিবস সম্পর্কে নেই এদের। সরকারের কাছে কাজ এবং সহায়তা দুটোই চেয়েছেন অসহায় হয়ে পড়া এসব খেটে খাওয়া মানুষ।

কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়ায় ছয় রাস্তার মোড়ে কয়েক যুগ ধরে বসছে এই হাট। প্রতিদিন ভোর থেকে জড়ো হন বিভিন্ন পেশার শ্রমিক। এখানে আসেন বালু ও মাটি তোলা শ্রমিক, ঘরের কাজের শ্রমিক, মালামাল টানা, রাজমিস্ত্রি-জোগালিসহ (সহযোগী) সব ধরনের কাজের শ্রমিক।

কুষ্টিয়া জেলা ও আশপাশের এলাকা থেকে কেউ হেঁটে, কেউবা আসেন সাইকেলে চেপে, কেউ আসেন ভ্যানে বা অন্য যানবাহনে। সঙ্গে থাকে কোদাল, ঝুড়ি, বেলচা, কাস্তেসহ নানা যন্ত্রপাতি। অনেকেই ঠেলাগাড়ি, ট্রলি ও ভ্যান নিয়েও আসেন। অনেক শ্রমিক আছেন পারেন সব কাজই।

সকাল সাড়ে সাতটায় সেই হাটে গিয়ে দেখা যায়, কাজের অপেক্ষায় আছেন দুই শতাধিক শ্রমিক। রাস্তার মুখেই সারিবদ্ধভাবে বসে আছেন। সামনে তাদের কাজের যন্ত্রপাতি, সাইকেল-ভ্যান।

কেউ কেউ আছেন দাঁড়িয়ে। কেউ আবার ছোটাছুটি করছেন। শ্রমিক খুঁজতে আসা মানুষ পেলেই ছুটে যাচ্ছেন। বাঁধছে জটলা। দামদর মিটে গেলে নিয়ে যাচ্ছেন কাজে।

এই শ্রমিকদের কেউই মে দিবস সম্পর্কে বলতে পারেন নি। তারা বলেন, এসব জানিনা আমরা কাজ চাই, খেতে চাই।

শ্রমিকরা জানান, লকডাউনের কারণে এখানে শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু কমেছে কাজের সুযোগ।

গত ১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউনের কারণে কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন নির্মাণকাজ বন্ধ। নদী থেকে বালু তোলাও কমেছে। এ কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।

শহরতলির বানিয়াপাড়া বাড়াদি থেকে আসা শ্রমিক মো. মহসিন বলেন, ‘আগে গড়ে ১০০ শ্রমিক থাকলেও এখন তা ৩০০ হয়ে গেছে। কোথাও কাজ নেই, সারা দিনে দুই কেজি চালের জোগাড়ও করা যাচ্ছে না। এখানে এসেও কাজ পাচ্ছেন না। বেশির ভাগই ফিরে যাচ্ছেন।’

‘রমজান মাস, তারওপর লকডাউন। এর জন্য কাজ নেই। আমাদের দিকে সরকার একটু তাকালে বেচে যেতাম’- বলছিলেন হরিপুর থেকে আসা বাবলু মণ্ডল।

তিনি বলেন, ‘এখানে ক্রমেই লোক বেড়ে যাচ্ছে। সবাই আসছে কাজের আসায়। কিন্তু ফিরে যেতে হচ্ছে।’

শ্রমিক বেড়ে যাওয়ার পর কমে গেছে মজুরি। এই হাটের শ্রমিকদের দিনে হাজিরা ছিল ৫০০ টাকা। এখন ৪০০ টাকায়ও কাজ পাওয়া যাচ্ছে না।

বাবুল বলেন, ‘পেটের তাগাদায় এখানে এসে গাঁট (জোট বেঁধে) হয়ে বসে থাকছি। আমরা লকডাউন মানতে পারছি না, মাস্ক কেনারও পয়সা নেই।’

বাড়াদি থেকে আসা শ্রমিক মজিবর রহমান বলেন, ‘আমি মাটি কাটি, বালু কাটি। কিন্তু এই হাটে গত এক সপ্তাহ ঘুরেই যাচ্ছি কোনো কাজ পাচ্ছি না। কাজ করানোর লোক নেই। লকডাউনে সব কাজ বন্ধ আছে। আমার সমস্যার শেষ নেই, মূল কথা হলো হাঁড়িতে চাল নাই।’

গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এসব শ্রমিক। মুখে মাস্কও নেই এদের। করোনা নিয়ে কোন দুচিন্তা নেই কারও।

‘গত ৭-৮ দিন কাজ পাইনি। একরকম অনাহারেই আছি’-বললেন বানিয়াপাড়ার শ্রমিক মো. হামিদুল। দাবি তোলেন সরকারি অনুদানের।

বলেন, ‘লকডাউনের কারণে আমরা কাজ পাচ্ছি না। কিন্তু লোনের কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে।’

শ্রমিক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘সরকার কোটি কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে। আমরা পাচ্ছি না। ঈদের সামনে কাজ দিক না হয় টাকা দিয়ে সাহায্য করুক সরকার।’

শহরের এরশাদনগর থেকে এসেছেন মাহাতাব আলী। বলেন, ‘সামনে ঈদ। ছেলে-পুলেরা কান্নাকাটি করছে। বয়স্ক ভাতার টাকাও পাচ্ছি না। কাজও নেই। কী যে করি!’

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ‘সহযোগিতা লাগবে না। কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করলেই হবে। কাজ করতে এসে পুলিশের তাড়া খাচ্ছি, ওদিকে বাড়িতে ভাত নেই।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net