October 8, 2025, 12:14 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরিফুর রহমানকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন কেবল শপথগ্রহণ বাকি।
বুধবার (১ অক্টোবর) আদালতের রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আরিফ বলেন, “আমি ২০২১ সালে মোবাইল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করি। কিন্তু সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাজী এনামুল হক অন্যায়ভাবে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেন। আমাকে ও আমার স্বজনদের ওপর হামলাও চালানো হয়। এমনকি ৮ নম্বর কেন্দ্রে শতভাগ ভোট প্রদর্শন করা হয়। এসব অনিয়মের কারণে আমি নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করি। দীর্ঘদিন পর আদালত আমার পক্ষে রায় দেন। এ রায় ঠেকাতেও নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, তবে আদালত ন্যায্য বিচার দিয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে গেজেট প্রকাশ করেছে এবং খুলনা বিভাগীয় কমিশনারকে তাকে শপথ পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। “আমি প্রত্যাশা করি দ্রুত শপথ গ্রহণের মাধ্যমে মিরপুর পৌরবাসীর সেবা করার সুযোগ পাব,” বলেন আরিফ।
গত ১০ সেপ্টেম্বর উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখা) মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত গেজেটে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের মিরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. এনামুল হককে মেয়র ঘোষণা বাতিল করে ‘মোবাইল ফোন’ প্রতীকের প্রার্থী আরিফুর রহমানকে বৈধভাবে মেয়র ঘোষণা করা হলো।
এর আগে ১২ আগস্ট আপিল শুনানিতে যথাযথ প্রমাণ না থাকায় ও বাদীপক্ষ অনুপস্থিত থাকায় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা জজ (২য় আদালত) মামলাটি খারিজ করে দিয়ে আরিফের পক্ষে রায় দেন। ওই রায়ের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে।
এরও আগে, গত ২৭ এপ্রিল কুষ্টিয়ার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর যুগ্ম দায়রা জজ মো. আলমগীর হোসাইন স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা ২০১০-এর ৫৯(খ) ধারা অনুযায়ী আরিফুর রহমানকে মেয়র ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে এনামুল হকের জয় বাতিল করে মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী আরিফুর রহমানকেই যথাযথভাবে মেয়র হিসেবে গণ্য করা হলো। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে আদালতের রায় কার্যকর ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা দেখা যায়। মিরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিমের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর তাকে বদলি করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে যুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. নাজমুল ইসলাম রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন, যা শেষ পর্যন্ত খারিজ হয়।