October 8, 2025, 12:14 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি বন্ধ থাকায় মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে দেশে কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এই হঠাৎ ঊর্ধ্বগতি সাধারণ ক্রেতা থেকে শুরু করে খুচরা ব্যবসায়ীদেরও কষ্ট দিয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) হিলি সবজি বাজারে জানা যায়, গত সপ্তাহে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এখন একই মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, অর্থাৎ প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১৩০ টাকারও বেশি। খুচরা বাজারে দাম এখন ২৮০ টাকা প্রতি কেজি, যেখানে এক সপ্তাহ আগে তা ছিল ১৫০–১৬০ টাকার মধ্যে।
বাজার সূত্র জানায়, দুর্গাপূজার ছুটির কারণে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামরিচের আমদানি ছয় দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে স্থানীয় সরবরাহ হঠাৎ কমে গিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
হিলি বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী হারুন আসকারী বলেন, “ভারত থেকে কাঁচামরিচ আসছে না, তাই বাজারে সরবরাহ কমে গেছে এবং দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। আমরা এখন রাজশাহী অঞ্চল থেকে মরিচ আনছি, তবে হিলি বন্দরে আমদানি শুরু হলে দাম আবার স্বাভাবিক হবে।”
কুষ্টিয়া পৌর বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর ভুঁইয়া জানান, দেশের বাজারে মরিচের অভাব মাসাধিককাল চলতে পারে। “প্রতি বছর এই সময় এমন হয়,” তিনি বলেন। “আমদানি ছাড়া বিকল্প নেই।”
হঠাৎ দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতারা হতাশ।
ক্রেতা লুৎফর রহমান বলেন, “গত সপ্তাহে ১৩০ টাকায় মরিচ কিনেছিলাম, আজ তা ২৬০ টাকা কেজি! এভাবে দাম বাড়লে রান্নার ঘরে মরিচই থাকবে না।”
অন্য ক্রেতা সেলিম মাহমুদ তফেল প্রশ্ন করেন, “দুই মাস আগে ৪০–৫০ টাকায় মরিচ কিনতাম, এখন ২৮০ টাকা! এই বাজারটা কী ধরনের?”
খুচরা বিক্রেতা মাহবুব আলী জানান, “ক্রেতারা রেগে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না। পাইকারি ২৬০ টাকায় কিনে খুচরা ২৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।”
স্থানীয় বাজারে মরিচের লাগামহীন দামের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ আট মাসের বিরতির পর আবার ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু করে। প্রথম চালান ৯,৮৪৮ টন ১০ জুলাই হিলি স্থলবন্দরে পৌঁছায় এবং তখন থেকে আমদানি অব্যাহত রয়েছে।
যদিও মরিচ মূলত মেক্সিকো থেকে এসেছে, বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যযুক্ত জাত চাষ করা হয়। পরিচিত স্বদেশী জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বিনদি, আকাশী, উব্ধে, ধনী, সাইতা, বোম্বাই ও সাহেব মরিচ। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইঅজও), বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউট (ইওঘঅ) এবং কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন করেছে, যা এখন বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে।