August 2, 2025, 7:05 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা

জাতীয় শিক্ষা নীতিকে পাশ কাটিয়ে প্রাথমিকে শিক্ষা বোর্ডের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনাকে আমলে না নিয়ে এবং জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-কে পাশ কাটিয়ে “প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন-২০২১” নামক একটি আইনের খসড়া তৈরি করে তার ওপর মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। “শিক্ষানীতি ২০১০” ও “জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১”-এর নীতি ও অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক বৃন্দ।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্ট ৩৬ নাগরিক। তারা বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে এ আইনের প্রস্তাব কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিশিষ্টজনেরা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে বেশ কিছু মাইলফলক অর্জন করেছে। প্রায় শতভাগ শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিতকরণ, ঝরে পড়ার হার কমানো, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের সমতা, উপবৃত্তি এবং বছরের প্রথম দিনে উৎসব আয়োজন করে নতুন বই প্রদান যার মধ্যে অন্যতম। এজন্য আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই।
এতে বলা হয়, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সবার জন্য বিনামূল্যে বই প্রদানের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে “গাইড বই” ব্যবহারের প্রবণতা কিছুটা হলেও হ্রাস পেয়েছে। একইভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময় সঙ্গত কারণেই শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পরীক্ষা ও বইয়ের বোঝা কমানোর ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনার প্রতিফলন আমরা লক্ষ্য করেছি ২০২১ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত “জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায়”, যেখানে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) রাখা হয়নি- এটি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ নাগরিক সমাজের একটি অন্যতম প্রত্যাশিত বিষয় ছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়, এমনকি জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষাকে “পাবলিক পরীক্ষা” হিসেবে ধরা হয়নি। এর পরিবর্তে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে উপজেলা, পৌরসভা বা থানা পর্যায়ে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, সম্প্রতি আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনাকে আমলে না নিয়ে এবং জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-কে পাশ কাটিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় “প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন-২০২১” নামক একটি আইনের খসড়া তৈরি করে তার ওপর মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। “শিক্ষানীতি ২০১০” ও “জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১”-এর নীতি ও অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন-২০২১ প্রণয়নের উদ্যোগ কেন নেওয়া হলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়। যেখানে করোনার কারণে গত শিক্ষা বছরে একটিও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি, এমনকি এ বছরও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, সেখানে এই বোর্ড গঠনের প্রস্তাব কতটুকু যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
তারা বলেন, আমরা সবসময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আমাদের ভবিষ্যৎ নাগরিকদের সৃজনশীল মেধা বিকাশে আনন্দমুখর পরিবেশে শিক্ষাগ্রহণের দাবি জানাই। তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে এবং প্রতিভার উন্মেষ ঘটানোর জন্য শুধুমাত্র পরীক্ষানির্ভর, সনদসর্বস্ব ব্যবস্থার পরিবর্তে সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ারও দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভর করা, গাইড বই ও প্রাইভেট টিউশনকে বৈধতা দেওয়া এবং কোচিং বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার নানা অপচেষ্টা আমরা পূর্বেও লক্ষ্য করেছি এবং প্রতিবাদও জানিয়েছি। প্রস্তাবিত “প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন-২০২১” আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে বইয়ের বোঝা বাড়াবে এবং করোনার মতো মহাবিপর্যয়ের পর অভিভাবকদের কোচিং ও গাইড বইয়ের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় বাড়াবে। আমরা মন্ত্রণালয়কে এই আতœঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আশা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধা বিকাশে সহায়তার সুযোগ সৃষ্টি করবেন এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পরিচালিত জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন (এনএসএ)-এর মতো মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার ফলাফলকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করা যায় সেদিকে দৃষ্টি দিবেন। আমরা বিশ্বাস করি “ভিশন-২০৪১” এর সাথে সংগতি রেখে নতুন প্রজন্মকে মেধা-মননের বিকাশ ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
এছাড়াও বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন- অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সেলিনা হোসেন, রামেন্দু মজুমদার, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও অধ্যাপক এম এম আকাশ প্রমুখ।
গত ৭ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন-২০২১ এর খসড়া প্রণয়নের বিষয়টি জানানো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net