August 3, 2025, 8:03 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের মূল্য দেয় না কেউ, ভেসে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা : খোদ জাতিসংঘ হাজার কোটি টাকার গড়াই নদী খনন/ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সঠিক ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতার অভাবে ব্যর্থতা ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ

হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে তিন কোটি টাকা পেতেন গাজী আনিস : র‌্যাব

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে তিন কোটি টাকা পেতেন গাজী আনিস তিন কোটি টাকা পেতেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
বুধবার (৬ জুলাই) দুপুরে কারওয়ার বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গাজী আনিসের সঙ্গে লেনদেনে টাকার পরিমাণ নিয়ে আসামিদের আপত্তি আছে। লেনদেন হয়েছে তা তারা স্বীকার করেছেন। বিভিন্ন সময়ে চেকে ও নগদে ৭৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে গাজী আনিসের লভ্যাংশসহ ন্যায্যপাওনা তিন কোটি টাকা। এটা নিয়েই মূলত তাদের মধ্যে একাধিকবার বাকবিতণ্ডা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৪ জুলাই বিকেল পৌনে ৫টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় গাজী আনিস নিজের গাঁয়ে পেট্রোল জাতীয় দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
গাজী আনিসের শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়ে যায়। অতঃপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ জুলাই ভোরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রকাশ্য দিবালকে মর্মান্তিক এই ঘটনা আলোড়িত করে দেশবাসীকে।
ওই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এ প্রেক্ষিতে র‌্যাব জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৩ এর অভিযানে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নুরুল আমিন (৫৫) এবং ফাতেমা আমিনকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়।
মামলা ও অন্যান্য সূত্রের বরাতে কমান্ডার মঈন বলেন, ২০১৭ সালে আমিন গ্রুপের কর্ণধার নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে ভিকটিমের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে ভিকটিমের সখ্যতা এবং আন্তরিকতা গড়ে ওঠে। গ্রেফতাররা ২০১৮ সালে চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী একটি দেশে গেলে সেখানে স্থানীয় একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থানকালে গাজী আনিসকে হেনোলাক্স কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য প্ররোচিত করেন। প্রথমে অসম্মতি জানালেও পরে রাজি হন এবং প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এরপর তাদের প্ররোচণায় তিনি আরও ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন।
অধিকাংশ টাকাই ভিকটিম ঋণ হিসেবে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন। বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং বিশ্বাসের কারণে তাদের মধ্যে কোনো চুক্তিনামা করা হয়নি। তারা বিনিয়োগপরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদনে গড়িমসি করতে থাকেন। এক পর‌্যায়ে প্রতিমাসে লভ্যাংশ প্রদানও বন্ধ করে দেন। কয়েকবার আনিসকে হেনস্তা-ভয়ভীতিও প্রদর্শন করা হয়।
ওই টাকা উদ্ধারের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন গাজী আনিস। এছাড়াও ঐ টাকা ফিরে পাওয়ার জন্য গত ২৯ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। গত ৩১ মে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে পাওনা টাকা আদায় সংক্রান্তে মামলা দায়ের বিষয়টি পোস্ট করেন। বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষিদের নিকট সহায়তা চান।
এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, গত ৪ জুলাই পাওনা টাকা পরিশোধের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিকেল গড়ালেও তারা নিহতকে টাকা প্রদান করেনি। এরপর গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
নিহত গাজী আনিস কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ঠিকাদারি ব্যবসার পাশাপাশি একটি টেলিকম কোম্পানিতে চাকরি করতেন। পরে চাকরি ছেড়ে কুষ্টিয়ায় গাড়ীর ব্যবসা শুরু করেন। তিনি সাহিত্যচর্চা করতেন এবং তার বেশ কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে।
আসামি নুরুল আমিন ১৯৮১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত গোপীবাগ ঢাকা এলাকায় কাদের হোমিও হল নামে হোমিও হলে ১৫ বছর চাকরি করেন। ওই সময়ে তার একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার কথা মাথায় আসলে ১৯৯১ সালে হেনোল্যাক্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা শুরু করেন। পরে কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে আমিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি নামকরণ করেন। ওই কোম্পানির অধীনে হেনোলাক্স কসমেটিকস্ যেমন- হেনোলাক্স কমপ্লেকশান ক্রিম, হেনোলাক্স স্পট ক্রিম, হেনোলাক্স মেছতা আউট ক্রিম ও হেনোলাক্স হেয়ার অয়েল ও পোলট্রি ফার্মের ব্যবসা করেন।
পরবর্তীকালে বাজারে হেনোলাক্সের চাহিদা কমে গেলে ২০০৯ সালে তিনি আমিন হারবাল নামে কোম্পানি নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা শুরু করেন এবং ২০১৬ সালে হেনোলাক্সের ব্যবসাও বন্ধ করে দেন। তাদের কাকরাইলে একটি ফ্ল্যাট, পুরানা পল্টনে স্কাই ভিউ হেনোলাক্স সেন্টার নামে একটি ১০তলা ভবন, পিংক সিটিতে ১টি ডুপ্লেক্স বাড়ি, মেরাজনগর কদমতলীতে হেনোলাক্স নামে ৪তলা ভবন, মোহাম্মদবাগ কদমতলী এলাকায় হেনোলাক্স ফ্যাক্টরি রয়েছে।
বর্তমানে ওই ফ্যাক্টরিতে খান ফুড প্রোডাক্টস, বন্যা ফুড প্রোডাক্টস ও জে কে অ্যাগ্রো ফুড নামে তিনটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাড়ায় তাদের উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে।
গ্রেফতার ফাতেমা আমিন একটি বেসরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডিএইচএমএস সম্পন্ন করে স্বামীর আমিন হোমিও হলে প্রথমে এক বছর হোমিও চিকিৎসা করেন। তিনি স্বামীর প্রতিষ্ঠিত আমিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি আমিন হারবাল কোম্পানির দেখাশোনা করেন।
গাজী আনিস ছাড়াও অন্য কেউ আসামিদের কাছ থেকে টাকা পান কি না জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাইনি।
গাজী আনিসের নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে নুরুল আমিন-ফামেতা দম্পতি রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে পালিয়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেন বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net