December 31, 2025, 9:09 pm

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম অনুসন্ধান এবং নির্বাচনি অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে ‘নির্বাচনি অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি’ গঠন করেছে কমিশন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৯১এ ও ৯১এএ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এসব কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার উপসচিব মোহাম্মদ দিদার হোসাইনের সই করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।
ইসি জানায়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এসব কমিটি গঠন করেছে। ৩০০টি কমিটিতে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের প্রধান দায়িত্ব হবে নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম অনুসন্ধান করা এবং সংশ্লিষ্ট আইনের আওতাধীন অপরাধসমূহের সংক্ষিপ্ত বিচার সম্পন্ন করা।
প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকেই কমিটির কর্মকর্তারা নিজ নিজ দপ্তর থেকে অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত থাকবেন। তারা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় উপস্থিত থেকে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে শুরু করে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের সময় পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব বহাল থাকবে।
নির্বাচন-পূর্ব কোনো অনিয়মের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তা অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। জেলা নির্বাচন অফিসার ওই প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠাবেন। পরবর্তীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পিডিএফ ফরম্যাটে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আইন অনুবিভাগের উপসচিবের (আইন বিষয়ক–১ শাখা) ইন্টারনাল অ্যাকাউন্টে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটিগুলো সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতিতে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
ইসি আরও জানায়, নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম যদি রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ লঙ্ঘনের কারণে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৯১খ (৩) অনুচ্ছেদের আওতাভুক্ত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়, তবে সংশ্লিষ্ট কমিটি ৯১কক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করতে পারবে। একই সঙ্গে আরপিওর ৭৩, ৭৫ ও ৭৭ অনুচ্ছেদের আওতাধীন অপরাধও এসব কমিটি সংক্ষিপ্ত বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে পারবে।
কমিটির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দায়িত্বপালনকালে একজন বেঞ্চ সহকারী, স্টেনোগ্রাফার অথবা অফিস সহকারীকে সহায়ক কর্মচারী হিসেবে সঙ্গে রাখার সুযোগ থাকবে।
এছাড়া সব জেলা প্রশাসককে প্রয়োজন অনুযায়ী সার্বক্ষণিক জিপগাড়ি, মাইক্রোবাস, স্পিডবোট বা অন্যান্য যানবাহন সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে। কমিটির কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারকে দুইজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান বা বিচারকার্য পরিচালনার প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েনের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
কমিটির কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মচারীরা বিধি মোতাবেক যাতায়াত ভাতা ও দৈনিক ভাতা (টিএ/ডিএ) পাবেন।