March 14, 2025, 12:01 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :

শুভ জন্মদিন জাতির পিতা

ড. আমানুর আমান, সম্পাদক ও প্রকাশক ; দৈনিক কুষ্টিয়া ও দ্য কুষ্টিয়া টাইমস/
আজ ১৭ মার্চ। আজ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। দিনটিকে ঘিরে আজ বাংলাদেশ ছাড়াও বিশে^র বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী ও অন্যান্য মানুষের মাঝে চলছে নানা উ”ছাস, নান আবেগ। বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলছে এই বাঙালীকে মানুষটিকে নিয়ে, বাঙালীর এক অবিসংবিদিত নেতাকে স্মরণ করতে। কারন বঙ্গবন্ধু শুধু বঙালী নামের নামের একটি জাতিকে একটি ভু-খন্ড ও পৃথক জাতিসত্তা দিয়েছেন তা নয়। তিনি বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সারা বিশে^র শোষিত, নিপীড়িত বনচিত মানুষের নেতাতে পরিণত হয়েছেন।
এই দিন বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি আনন্দের দিন। বাঙালীর হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজনই জন্মেছিলেন। যার জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতো না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। কারন ভারত স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুই একমাত্র বাঙালী যিনি বিশ্বাসের ভিত্তিতে বিভক্ত হওয়া ভারতীয় উপমহাদেশীয় রাজনীতির ‘ত্রæটিপূর্ণ’ ভিত্তির বিরুদ্ধে সমুল বিদ্রোহ করেছিলেন, হাজার হাজার বছর ধরে বিদ্যমান সংস্কৃতিগত সুস্পষ্ট সহাব¯’ানের পরিবর্তে সমাজের মেরুকরণকে নিন্দা কওে সেখানে কুঠারাঘাত করেছিলেন। দুটি ভিন্ন জাতির একত্র হওয়ার পথে তিনিই বাধা হয়ে দাঁড়ান। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভের মাধ্যমে সেই দুঃস্বপ্ন বঙ্গোপসাগরে চিরতরে সমাহিত হয়।
১৯২০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা সায়েরা খাতুনের চার কন্যা এবং দুই পুত্রের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর বাবা মায়ের দেয়া আদুরে নাম ছিল খোকা।
অন্যায়ের বির“দ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা, গরিব-দুঃখী মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও তাদের দুঃখ দূর করার প্রতিজ্ঞা তাঁকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে। স্কুল থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গ্রামের স্কুলে তাঁর লেখাপড়ার হাতেখড়ি। ১৯২৭ সালে শেখ মুজিব গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুর“ করেন। ১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং এখানেই ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৪১ সালে অসু¯’ শরীর নিয়েই ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন। ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরপরই কিশোর মুজিব কলকাতায় যান। কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র থাকা অব¯’ায় তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বড় পরিবর্তনগুলো শুর“ হয়। তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় হন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হলে শেখ মুজিবও ঢাকায় চলে আসেন। নতুন রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালে নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবী নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নেয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার সূচনা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৬ এর ঐতিহাসিক ছয় দফা ভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা।
১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতা তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়। কিš‘ পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালিদের বির“দ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন। ২৫ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী পরিকল্পিত গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ প্রায় নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করে। স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার এই মহান নেতার জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। কোনো বিশেষ ঘটনা বা আনন্দের দিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেকেই অনেকভাবে তুওে ধরেছেন নানা লেখায়, কথায়। তবে সবথেকে আপন করে তুলে ধরেছেন কিংবদন্তি বাঙালি কবি ও প্রাবন্ধিক অন্নদাশঙ্কর রায়। তিনি লিখেছেন
‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান…’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি সপরিবার সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন। এই জঘন্য হত্যাকান্ডের দীর্ঘ পর তাঁর রক্তের যোগ্য উত্তরাধিকার কন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রে বাস্তবায়িত হ”েছ। দেশ এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে এক স্বপ্নের সিঁড়িতে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net