April 23, 2025, 2:35 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ায় একটি মামলার এজাহার জমা দিয়েছেন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক জা¦ালািনী উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান।
আজ (বৃহস্পতিবার) তিনি কুষ্টিয়ায় এসে এ মামলাটি করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মামলার প্রধান আসামী। এছাড়াও, কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফও রয়েছেন আসামী তালিকায়। মামলায় পুলিশের সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সাবেক পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন ও আওয়ামী লীগসহ তার অঙ্গ সংগঠনের ৪৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়।
এর আগে কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় তিনি উল্লেখ করেন, তিনি মামলা করার জন্য কুষ্টিয়া এসেছেন। এই মামলার ১নং আসামি হবেন শেখ হাসিনা। মামলার ভিত্তিতে হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি দাবি জানাবেন বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ায় আদালত থেকে মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা করা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে তিনি আহত হন। তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর হক চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তার আগে তিনি বেলা ১১টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভা করেন।
তিনি বলেন, এই কুষ্টিয়ায় আমাকে রক্তাক্ত করা হয়েছিল। সেদিনের সেই ফ্যাসিবাদি আদালত চত্বরে তারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি তো মরিনি। আমাকে দেশ ছাড়া করেছে। তারপরও আমি মরিনি। আবার দেশেও এসেছি। কিন্তু তারা কোথায় ? তাদেরকে নিয়ে আসা হবে। বিচার করা হবে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের কাঁধে চেপে বসা জালেমশাহীর পতন ঘটেছে। ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট ও ইসলামবিরোধী সরকার ছিল সেটি সরাসরি দিল্লি থেকে পরিচালিত হয়েছে। দুটো লক্ষ্যে ছাত্র -জনতার আন্দোলন হয়েছিল। প্রথম লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদি সরকারের পতন ঘটানো। দ্বিতীয়ত ভারতীয় আধিপত্যবাদকে নির্মূল করা। আমাদের প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়টা আমরা এখনও অর্জন করতে পারিনি। আমাদের সুযোগ এসেছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে চিরতরে উৎখাত করতে হবে। যে ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে আবরার শহীদ হয়েছে। আমাদের এই লড়াইকে অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার জন্য আমি সাত দিনের সময় দিয়েছিলাম। রবিবার সেই সময় শেষ হবে। রবিবারের মধ্যে যদি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে সোমবার থেকে আমার দাবির সমর্থনে আপনারা এখানে আন্দোলন শুরু করবেন। নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমি ঢাকায় মাঠে থাকবো। আপনারা এখানে মাঠে থাকবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও আমার দেশ পত্রিকার নগর সম্পাদক এম. আব্দুল্লাহ, এবি পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মেজর আব্দুল ওয়াহাব মিনার, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক।
মাহমুদুর বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে মুক্তি পেতে হলে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসীদের থেকে আগে মুক্তি পেতে হবে। বাংলাদেশের একমাত্র জঙ্গি সংগঠন হলো এই ছাত্রলীগ। আগে ছাত্রলীগকে দিয়ে শুরু করি পরে আওয়ামী লীগকে ধরবো। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত তাদের শক্তি দেখাতে পারেনি। সরকার খুব স্লো। তারা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখনও কোনও অর্থবহ পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
Leave a Reply