March 24, 2025, 5:49 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
মোংলা বন্দর থেকে রেলপথে পণ্য পরিবহন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে, যা দেশের বাণিজ্য ও পরিবহন খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রথম চালানে, ৩০টি ওয়াগনবাহী একটি মালবাহী ট্রেন মোংলা থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে ৫০ টন চিটাগুড় পরিবহন করেছে। এই চিটাগুড় ফিড উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হবে।
ট্রেনটি শুক্রবার বিকেলে মোংলা বন্দর থেকে ছেড়ে যায় এবং রাতের মধ্যেই গন্তব্যে পৌঁছায়।
এর আগে, পানামা পতাকাবাহী জাহাজ এমটি ডলফিন-১৯ গত ২২ জানুয়ারি পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ১৫ দিনের সমুদ্রযাত্রা শেষে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৫,৫০০ মেট্রিক টন চিটাগুড় নিয়ে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে ভেড়ে। পরবর্তীতে, তরল এই পণ্য ইউনাইটেড রিফাইনারি অ্যান্ড বাল্ক স্টোরেজ লিমিটেডে সংরক্ষণ করা হয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব, বোর্ড ও জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান জানান, শুক্রবারের রেলপথে পণ্য পরিবহন একটি অনানুষ্ঠানিক পদক্ষেপ ছিল। তিনি বলেন, “মোংলা-খুলনা রেলপথের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের মহাপরিকল্পনা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।”
বাণিজ্যিক সংযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনা/
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই উদ্যোগটি মোংলা-খুলনা রেলপথে পণ্য পরিবহন সম্প্রসারণের অংশ। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য পরিবহন ব্যয় কমাবে এবং সংযোগ ব্যবস্থা উন্নত করবে।
খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি আগের আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম মেগাপ্রকল্প ছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মোংলা বন্দরের সঙ্গে জাতীয় রেল সংযোগ স্থাপন করা এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক পরিবহন সহজ করা।
ব্যবসায়ীদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া/
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সম্প্রসারণে মোংলা বন্দরের গুরুত্ব আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
মোংলা বন্দর বার্থ-শিপ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, “মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো পণ্যবাহী ট্রেন চালু হওয়ায় আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এর ফলে ব্যবসায়ীদের পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং তারা মোংলা বন্দর ব্যবহারে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবেন, যা সমুদ্রবন্দরটির কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি করবে।”
সুবিধা সর্বোচ্চ করতে হলে, মোংলা বন্দর থেকে সরাসরি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং আন্তর্জাতিকভাবে পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর একনেকের অনুমোদনের মাধ্যমে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্প শুরু হয়। ১৪ বছরে প্রকল্পটির মোট ব্যয় হয় ৪,২৬১ কোটি টাকা, যার মধ্যে ২,৯৪৮ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ থেকে অর্থায়ন করা হয়েছে।
Leave a Reply