June 18, 2025, 11:35 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সরগরম হয়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বাগেরহাট শহরের কেবি বাজার। দীর্ঘ ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ১১ জুন থেকে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে বঙ্গোপসাগরে। মাছ ধরছেন কৃষকরা, আনছেন আড়তে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে বাগেরহাট শহরের দড়াটানা নদীর তীরে শহররক্ষা বাঁধসংলগ্ন কেবি বাজারে নিষেধাজ্ঞা পরবর্তি প্রথম মাছের চালান নিয়ে আসেন জেলেরা। সকাল থেকেই জমে ওঠে মাছের হাট। ট্রলারভর্তি মাছ নিয়ে জেলেরা ভিড় করছেন বাজার ঘাটে, চলছে পাইকারদের ডাকাডাকি, দরদাম আর বেচাকেনা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরই মাছ ধরা শুরু হয়েছে। মাছ ধরে আজ প্রথমদিনের মতো সাগর থেকে জেলেরা মাছ নিয়ে আসতে শুরু করেছেন। এদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় বেচাকেনা। কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয় প্রতিদিন এই বাজারে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ইলিশ মাছ। ইলিশ ছাড়াও বাজারে উঠেছে কাউয়া, চেলা, ঢেলা চেলা, লইট্টা, ভোল, কঙ্কন, কইয়া ভোল, জাবা ভোল, মোচন ঘাগড়া, মেইদ, টেংড়া, রূপচাঁদা, বোতলমাছসহ প্রায় ৫০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ।
শুক্রবার বাজারে ইলিশের দর ছিল, ২০০-৩০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ৬০০-৮০০ টাকা, ৫০০-৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ১২০০-১৫০০ টাকা। ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের প্রতি কেজি ২০০০-২৫০০ টাকা।
এছাড়া রূপচাঁদা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায়, আর কঙ্কন, তুলারডাঁটি, ঢেলাচ্যালা, ভেটকি, লইট্টা, ছুড়ি, জাবা, বিড়ালজাবা প্রজাতির মাছ ১০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি হিমায়িত মাছও পাওয়া যাচ্ছে এই বাজারে।
কেবি বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘ট্রলার আসছে প্রতিমুহুর্তেই, মাছের পরিমাণ কম হলেও পাইকারদের উপস্থিতি বেশি। তাই দাম কিছুটা চড়া। তবে সামনে সরবরাহ বাড়লে দামও কমে আসবে।’’
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘উপকূলীয় অঞ্চলের ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের মধ্যে অনেকগুলোর প্রজনন মৌসুম এই সময়েই পড়ে। সেগুলোর বংশ বিস্তারের স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়ে থাকে। এতে সাগরে মাছের প্রাকৃতিক বংশবৃদ্ধি নির্বিঘ্ন হয়, যা সামনের সময়ে আরও বেশি মাছ আহরণে সহায়ক হবে।’’
প্রসঙ্গত, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও মজুত বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার প্রতিবছর ২০ এপ্রিল থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে এবার জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে মিল রেখে সময় এগিয়ে এনে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনের জন্য তা কার্যকর করা হয়। এই সময়ে সব ধরনের সামুদ্রিক মাছ ধরা এবং গভীর সমুদ্রে ট্রলার চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ছিল।
Leave a Reply