June 18, 2025, 12:12 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/বিদেশী গণমাধ্যম
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যিকার সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের রাজধানী তেহরানের বাসিন্দাদের হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১৭ জুন) সিএনএনের লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবার অতিসত্বর তেহরান ছেড়ে যাওয়া উচিৎ। তবে কেন সবার তেহরান ত্যাগ করতে হবে- তা নিয়ে স্পট করে কিছু বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় সোমবার ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে আরও লিখেছেন, ইরানকে যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বলেছিলাম তাতে তাদের স্বাক্ষর করা উচিত ছিল। কি লজ্জা এবং প্রাণের অপচয়! সহজভাবে বলতে গেলে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না। আমি বারবার বলেছি!
গত শুক্রবার ভোরে ইরানে আকস্মিক ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর জবাবে ইরানও ইসরায়েলে হামলা চালায়। এরপর থেকে দেশ দুইটির মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে।
ইসরায়েলি হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক। নিহতদের মধ্যে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, কমান্ডার ও অন্তত ১১ জন পরমাণুবিজ্ঞানী রয়েছেন।
অন্যদিকে ইরানি হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়েছে।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে এবং এতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে সোমবার (১৬ জুন) ফোনে কথা বলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান। দুই নেতাই দ্রুত যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণ সমঝোতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন জানায়, দুই নেতা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিসহ সব বিরোধপূর্ণ ইস্যুর রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছেন। এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য তারা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন।
ক্রেমলিনের বিবৃতি অনুযায়ী, পুতিন ও এরদোয়ান দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন— উত্তেজনা প্রশমনে কেবল সামরিক পথ নয়, বরং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংলাপই হতে পারে টেকসই সমাধানের পথ। রাশিয়া ও তুরস্ক— উভয় দেশই ইরান ও ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখে, এবং তাদের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এই দুই নেতার আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে একইদিন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে পৃথক ফোনালাপে অংশ নেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ওই আলাপে ইরানি প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে জানান, তেহরান যুদ্ধ শুরু করেনি এবং যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে চায় না, তবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আনুপাতিক জবাব দেবে। তিনি বলেন, “ইসরায়েলি হামলায় আমাদের বেসামরিক নাগরিক, বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছেন। আমাদের সহ্য করার সীমা রয়েছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের কূটনৈতিক যোগাযোগ যুদ্ধবিরতির পথ প্রশস্ত করতে পারে। পুতিন ও এরদোয়ানের বার্তা আন্তর্জাতিক মহলকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য উৎসাহিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a Reply