August 16, 2025, 2:15 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় মোটরসাইকেল রেসিং করতে গিয়ে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাবনা–কুষ্টিয়া হাইওয়ে সড়কের বারোমাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—নাহিদ হোসেন (১৭), দৌলতপুর উপজেলার তাগুনিয়া সরদারপাড়া গ্রামের নিপুল হোসেনের ছেলে এবং তার বন্ধু সিয়াম হোসেন (১৬), একই উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কুরবান আলীর ছেলে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলবেলা প্রায় ১০টি মোটরসাইকেল লালন শাহ সেতু থেকে ভেড়ামারার দিকে রেসিং করছিল। প্রতিটি বাইকই ছিল উচ্চগতিতে। এসময় নাহিদ ও সিয়াম তাদের মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। বারোমাইল এলাকার যাত্রীছাউনি সংলগ্ন ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তারা একটি পিকআপ ভ্যানের পেছনে সজোরে ধাক্কা মারেন।
দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই নাহিদ ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত সিয়ামকে উদ্ধার করে দ্রুত ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহত দুই কিশোরই স্থানীয়ভাবে পরিচিত ছিল। বিশেষ করে নাহিদ পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও সক্রিয় ছিল বলে জানিয়েছে তার পরিবার। সিয়ামও বন্ধু মহলে ছিল প্রাণবন্ত। কিন্তু অল্প বয়সে বেপরোয়া বাইক চালানো তাদের জীবন কেড়ে নিলো।
কুষ্টিয়া হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জয়দেব কুমার সরকার বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি। পরিবারের অনুরোধে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। কোনো পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি।”
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদারও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, কিশোরদের মধ্যে মোটরসাইকেল রেসিং এখন নতুন এক বিপজ্জনক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। লালন শাহ সেতু থেকে হাইওয়ে সড়কের বিভিন্ন অংশকে রেস ট্র্যাক হিসেবে ব্যবহার করছে কিশোর-তরুণরা। এর আগে একই এলাকায় একাধিকবার এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে।
সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, এ ধরনের রেসিং প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। পাশাপাশি পরিবারকেও সচেতন হতে হবে, যাতে কিশোররা ঝুঁকিপূর্ণ রেসিং বা বেপরোয়া গতির প্রতি আসক্ত না হয়।