October 8, 2025, 3:43 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। টানা দুইদিন ধরে পানি কমার প্রবণতা দেখা দিলেও দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ডুবে গেছে শত শত হেক্টর আবাদি জমি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রশিদুর রহমান জানান, বর্তমানে পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের কোনো আশঙ্কা নেই। রাজশাহীর নিম্নাঞ্চল থেকে নেমে আসা পানি কমতে শুরু করায় পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। ভেড়ামারার হার্ডিঘর পয়েন্টে শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে পদ্মার পানি রেকর্ড করা হয় ১২.৯৩ সেন্টিমিটার, রবিবার (১৭ আগস্ট) সকালে তা নেমে দাঁড়ায় ১২.৮৩ সেন্টিমিটারে। একদিনে শূন্য দশমিক ১০ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।
একইভাবে, পদ্মার শাখা গড়াই নদীতেও পানি কমেছে ১০ সেন্টিমিটার।
গ্রামীণ জনজীবন স্থবির/
চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গ্রামীণ জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলের প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির মরিচ, ভুট্টা, সবজি, কলা, ধান ও পাট পানির নিচে চলে গেছে। ফলে কৃষকরা পড়েছেন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে।
চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন, “রাস্তায় পানি উঠায় আমাদের ইউনিয়ন মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।”
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, তার ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। বিশেষ করে আবাদি জমির ফসল—মরিচ, সবজি, ধান ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ/
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ২১টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুশতাক আহম্মেদ বলেন, “বিদ্যালয়গুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা রাখা হয়েছে, যাতে বন্যাকবলিত মানুষ সেখানে নিরাপদে থাকতে পারেন।”
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানান, চরাঞ্চলের জমিতে মরিচ, রোপা আউশ, কলা, ভুট্টা ও বিভিন্ন সবজি ডুবে গেছে। কিছু এলাকায় বসতভিটাতেও পানি ঢুকে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় দৌলতপুরের চারটি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হচ্ছে এবং শুকনো খাবার ও ত্রাণ সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।