October 14, 2025, 5:57 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
তিনটি খাতে অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিম কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। তিনটি খাত হলো, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নিয়োগ বাণিজ্য, মেগা প্রকল্পে অনিয়ম এবং মেগা প্রকল্প থেকে নিয়ম বহির্ভূত অর্থ উত্তোলনের অভিযোগ।
সোমবার ও মঙ্গলবার (১৩ ও ১৪ অক্টোবর) দুদকের সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন। তিনি চারজন ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
তিনি জানান, “শিক্ষক নিয়োগ, ভুয়া বিল এবং মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে আমরা তদন্ত করতে এসেছি। আগে বিষয়গুলো পর্যালোচনা বা সরেজমিনে দেখা হয়নি। প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত পরিমাপ করা সম্ভব নয়। আশা করছি এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ হবে।”
প্রসঙ্গত, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের কণ্ঠস্বরের মতো অন্তত ১৪টি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়। পরে এর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সাবেক ভিসি ড. শেখ আবদুস সালামের বিরুদ্ধে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি।
এছাড়া, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইবির ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজের ৬.২৫ কোটি টাকার ভুয়া বিল উত্তোলন ও ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগের তীর ছিল ঐ সময়ের টেজ্রারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধ্ েবিশ^বিদ্যারয়ের ট্রেজারি রক্ষায় তিনি চরমভাব ব্যর্থ হন বলে অভিযোগ উঠে। অভিযোগে বলা হয়, একটি বিশেষ সময়ে, বিশেষ বিবেচনায় অনেকটা রাতের আধাঁরে কয়েকজন ঠিকাদারকে প্রায় ৬ কোটি টাকার একটি বিল পাইয়ে দেয়া হয়। এই ঘটনা ঘটানো হয় খুবই চুপিচুপি। এর সঙ্গে জড়িত ছিল প্রকল্পের কর্মকর্তারা, হিসাব শাখা ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কিছু বক্তি।
বিষয়টি তদন্তে তৎকালীন ভিসি ড. শেখ আবদুস সালাম ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রতিবেদনে ঐ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের অনিয়মের বিষয় উঠে আসে।
তৎকালীন সিন্ডিকেট শাস্তি নির্ধারণ করতে না পারায় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তিন সদস্যের শাস্তি কমিটি গঠন করা হয়। এতে আহ্বায়ক ছিলেন তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এ কিউ এম মাহবুব, সদস্য সচিব প্রফেসর ড. আনিচুর রহমান, এবং আরেক সদস্য ছিলেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রেজওয়ানুল ইসলাম। তবে কোটা আন্দোলন এবং পরবর্তীতে পটপরিবর্তনের কারণে কাজের অগ্রগতি হয়নি। একই বিষয়ের তদন্তে এখন দুদকও নেমেছে। অনুসন্ধানের স্বার্থে তারা অভিযুক্তদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, তবে অদৃশ্য কারণে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।
তদন্ত বিষয়ে রুটিন দায়িত্ব থাকা প্রো-ভিসি ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, “দুদকের কর্মকর্তারা সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছিলেন। ‘কেমন আছো-কেমন আছেন’ ছাড়িয়ে কোনো কথা হয়নি। তারা তদন্তের জন্য এসেছেন এবং আমি জানি তারা তাদের কাজ করছেন।”
শুভব্রত/