November 22, 2024, 1:09 am
দৈনিক কুষ্টিয়া ডিজিটাল ডেস্ক/
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ অভিবাসী শ্রমিককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এখনও কোন বড় ধরনের অগ্রগতি দেখাতে পারেনি লিবিয় সরকার। তবে সেদেশের পুলিশ প্রশাসন বলছে মানবপাচারকারী চক্রের এক সদস্যের হত্যার বদলা হিসেবেই নিহতের পরিবারের লোকজন এ হত্যাকান্ড ঘটায়। নিহত বাকি চারজন আফ্রিকান।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) লিবিয়ার সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের মিজদা শহরের এ ঘটনায় আরও ১১ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশিসহ ওই অভিবাসীদের মিজদা শহরের একটি জায়গায় টাকার জন্য জিম্মি করে রেখেছিল মানবপাচারকারী চক্র। এ নিয়ে এক পর্যায়ে ওই চক্রের সঙ্গে মারামারি হয় অভিবাসী শ্রমিকদের। এতে এক মানবপাচারকারী মারা যায়। তারই প্রতিশোধ হিসেবে সেই মানবপাচারকারীর পরিবারের লোকজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
এদের মধ্যে একজন বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশির সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে লিবিয়ার বাংলাদেশী দূতাবাস। তিনি বর্তমানে এক লিবিয়ীয় নাগরিকের আশ্রয়ে আত্মগোপনে আছেন।
সেখান থেকে তিনি দূতাবাসকে জানান, ১৫ দিন আগে বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে কাজের সন্ধানে ত্রিপলি শহরে আসার পথে তিনিসহ মোট ৩৮ জন বাংলাদেশি মিজদা শহরে মুক্তিপণের জন্য দুষ্কৃতিকারীদের হাতে জিম্মি হন। জিম্মি অবস্থায় তাদের অত্যাচার, নির্যাতন করার একপর্যায়ে অপহৃত ব্যক্তিরা মূল অপহরণকারী লিবিয়ীয় নাগরিককে হত্যা করে এবং এর জেরে অন্য দুষ্কৃতিকারীরা আকস্মিকভাবে তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত হন। তাদের মরদেহ মিজদা হাসপাতালে রাখা আছে। অপর বাংলাদেশিরা হাতে-পায়ে, বুকে-পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) লিবিয়া কার্যালয়ের মুখপাত্র সাফা সেহলি তারা ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন।
ঘটনার পর লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় মিজদা হাসপাতালের পরিচালক টেলিফোনে এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানান, মরদেহগুলো বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রাখা রয়েছে। অন্যদিকে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
আহত ১১ জন বাংলাদেশিকে জিনতান হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ত্রিপলি মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, দুঃখজনকভাবে ২৬ জন নিহত, ১১ জন আহত। পাচারকারীরা ত্রিপলি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে তাদের হত্যা করেছে। ধারণা করা হচ্ছে অন্য কোনো দেশে তাদের পাচার করা হচ্ছিল। পথিমধ্যে তাদের সাথে কোনো ঝামেলা হওয়ায় পাচারকারীরা তাদের মেরে ফেলেছে।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে একজনকে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Leave a Reply