December 27, 2024, 7:43 am
দৈনিক কুষ্টিয়া ডেস্ক/
বঙ্গবন্ধু ও বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় এক সমাবেশে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের সমর্থকদের হুঁশিয়ার করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলেছেন বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন ১১ জন নাগরিক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন: সারোয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, আবদুস সেলিম, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুছ, হাসান আরিফ ও আহকামউল্লাহ।
বিবৃতিদাতারা বলেছেন, আমরা মনে করি এই পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলেছেন। ভাস্কর্য ইস্যুতে দেয়া তার বক্তব্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অস্ত্রহাতে লড়াই করে পাওয়া বাংলাদেশের মৌল চাওয়াগুলোকে আরও একবার স্পষ্ট করেছে।
ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে ২৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক সমাবেশে এসপি বলেন, ‘আপনি যদি বাংলাদেশের সংবিধান, আইন না মানেন তাহলে আপনার কাছে তিনটা অপশন আছে। এক, উল্টাপাল্টা করবেন, হাত ভেঙে দিবো, জেল খাটতে হবে। দ্বিতীয় অপশন হচ্ছে, একেবারে চুপ করে থাকবেন।ৃবাংলাদেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না। চুপ করে নিজের জীবনযাপন করবেন। আর তিন নম্বর হলো যদি আপনার বাংলাদেশ পছন্দ না হয়, তাহলে ইউ আর ওয়েলকাম টু গো ইওর পেয়ারা পাকিস্তান।’
এই বক্তব্যের কারণে পুলিশ সুপারের অপসারণ চেয়ে হেফাজতের বিবৃতি প্রসঙ্গে ১১ নাগরিক বলেন, ‘এসপির বক্তব্যের বিরুদ্ধে দেওয়া হেফাজতে ইসলামের বক্তব্য বিবৃতি তাদের একাত্তরের চেতনাবিরোধী অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে।’
মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণ করে তারা বলেন, ‘সকলেই জানা আছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। রাজারবাগে ইতিহাস সৃষ্টিকরা সেই বিদ্রোহী চেতনাই কুষ্টিয়ার এসপির বক্তব্যে লক্ষ্য করেছি আমরা। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষে সচেতন এবং সুদৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন তিনি।’
‘এসপির বক্তব্যের বিরোধীতাকারী এ অংশটিকে আমরা খুব ভালভাবে চিনি। এরা একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি। বর্বর পাকিস্তানীদের প্রজন্ম। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয়ে সামনে আসে। কখনো জামাত শিবির। কখনোবা হেফাজত। এরা আজও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এই কারণে এরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার দুঃসাহস দেখিয়েছে। এর পর আর এদের কোন ছাড় দেয়া যায় না। এ কারণেই এসপি এই উগ্রবাদীদের চূড়ান্তভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন বলে আমরা মনে করি,’ বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তারা।
এই পরিস্থিতিতে এসপির বক্তব্যের বিরোধিতাকারী ও হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
Leave a Reply