September 10, 2025, 3:23 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
ডাকসুর আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা/ ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস ফরহাদ দেশে দাম ২৫০০, ভারতে যাচ্ছে ১৫০০ টাকা দরে ১২০০ টন ইলিশ রাজবাড়ীতে মোটরসাইকেল রেসে প্রাণ গেল দুই বন্ধুর কেরুর আধুনিকায়ন ১৩ বছরেও শেষ হয়নি, ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি একাদশে ভর্তি শুরু, জেলা পর্যায়ে নন-এপিওতে ভর্তি ফি ৩ হাজার টাকা, ক্লাস ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত, আসছে মিড-ডে মিল ইউক্রেন চুক্তি মানতে না পারলে সামরিকভাবে লক্ষ্য পূরণ করবে রাশিয়া: পুতিন সংকটাপন্ন অবস্থায় ফরিদা পারভীন, চিকিৎসায় সহায়তায় প্রস্তুত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেলো সুপ্রিম কোর্টে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে মাছ রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ টন

মানবেতর দিন কাটছে বীর মুক্তিযোদ্ধার শতবর্ষী মা আছিরন নেছা।

দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/

চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধার শতবর্ষী মা আছিরন নেছা। মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর থেকে তার স্থান হয়েছে বাড়ির পরিত্যক্ত গোয়ালঘরে।

 

কুষ্টিয়া সদরের দেড়ীপাড়া গ্রামে বাড়ি তার। গরু-ছাগল রাখার ঝুপড়ী ঘরে অচল প্রায় শরীর নিয়ে একাই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।

 

আছিরনের ছেলে সেনাসদস্য আব্দুল ওয়াহিদের মুক্তিযুদ্ধে ছিল বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা। ২০১৩ সালে মারা যান তিনি। এরপর থেকেই আছিরনের দুঃখের শুরু। অন্য সন্তানরা খোঁজও নেন না এই বৃদ্ধার নাতি রেজাউল করিম ডাবলুও সেনাসদস্য। তিনি বছরে ২০ দিনের বেশি এলাকায় থাকতে পারেন না। দূর থেকে টাকাপয়সা দিয়ে সহায়তা করেন। কিন্তু সেই টাকাও পুরোটা পৌঁছে না। দাদির এই দশায় তার মনেও আছে দুঃখবোধ।

 

আছিরনের বয়স এক শর বেশি বলে দাবি করেছেন ডাবলু। তিনি বলেন, দাদি স্প্যানিশ ফ্লুর গল্প বলতেন। সেটি হয়েছিল ১৯২০ সালে। সে সময় তার বয়স ১০-১২ বছর হলেও এখন ১১০ বছরের বেশি হবে।

 

আছিরন বলেন, ‘আমার জানে কোনো আরাম নেই, হাঁটতে গেলে পড়ে যাই। শরীরের সব জায়গা ব্যথা। আমার বাবাটা (মুক্তিযোদ্ধা ছেলে) মরে যাওয়ার পর আমার কপালে আগুন লেগে গেছে। ঘরের মধ্যে বোল্লা (বোলতা) বাসা বেঁধেছে। আমি নড়তে পারি না। আমাকে কামড়ে শেষ করে দিচ্ছে। আমাকে কেউ দেখে না। ছোট ছেলে আর ওয়াহিদের ছেলে ডাবলু খোঁজ নেয়।’

 

ডাবলু বলেন, ‘সৈনিক পদে চাকরি করি। বছরে মাত্র ২০ দিন ছুটি পাই। দাদীকে দেখতে বা যত্ন করতে আসতে পারি না। কিন্তু তার জন্য টাকা পাঠাই। এই টাকাও অনেক সময় তার পর্যন্ত পৌঁছায় না।’

 

ডাবলু বলেন, তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা দুটি পেনশন পান। একটি সেনা হিসেবে অবসরের। অন্যটি মুক্তিযোদ্ধার। এসব তুলে নেন তার মা, কিন্তু দাদীর খোঁজ নেন না। তিনি একটি পেনশন দাদীকে দেয়ার দাবী জানান।

 

‘আছিরন সেনাসদস্য ও মুক্তিযোদ্ধার মা, তার জন্য রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে’- এমন মন্তব্য করে ডাবলু দাদীর জন্য সরকারি উদ্যোগে ঘর করে দেয়ার দাবী জানান। বলেন, তার চিকিৎসা ও খাবারের ব্যবস্থাও যেন করে সরকার।

 

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. অলিউর রহমান বলেন, ‘মিলিটারি মরে যাওয়ার পর থেকে তার মা অসহায় হয়ে পড়ে আছে। তার কেউ খোঁজ নেয় না। এটা খুবই খারাপ।’ তিনি বলেন, ‘তার (আছিরন) জাতীয় পরিচয়পত্রও নেই যে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা করবে। মুজিববর্ষে অনেক ঘর তৈরি করেছে সরকার। এখান থেকেও যদি একটি দেয়া যেতো ভালো হতো।’

 

স্থানীয় আব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইয়ামিন আলী বলেন, ‘আছিরন যেহেতু আসতে পারেন না। তার ছোট ছেলেকে বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি ভাবে মাসে মাসে একটা টাকা তাকে দেয়া হলে ভালোমতো চলতে পারতেন। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে তার মা যেন জীবনের শেষ সময়ে সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net