August 2, 2025, 9:58 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
আজ থেকেই কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা ধানের রেকর্ড উৎপাদন, আমদানিও প্রচুর তবু চালের দাম বেড়েছে ১১%-১৬% যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির চাপ, এডিবি পূর্বাভাসে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমার শঙ্কা

খুলনা বিভাগে ১০৫ ইউপিতে আ’ লীগ মনোনিত ৫২, বিদ্রোহীরা ৩৪টি, স্বতন্ত্ররাও পিছিয়ে নেই

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বুধবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে খুলনা বিভাগ জুড়ে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় জেলাগুলিতে শাসক দল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভাল করেছে। এমনকি কোন কোন জায়গায় তারা দাপটের সাথে দলের মনোনিত প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয় অর্জন করেছে।
বুধবার যে জেলাগুলোতে নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, যশোর, বাগেরহাট ও খুলনা।
এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় ১৭টি, মেহেরপুরে ৯টি, ঝিনাইদহে ১২টি, খুলনাতে ২৫টি, নড়াইলে ১২টি, চুয়াডাঙায় ৫টি, যশোরে ২০টিও বাগেরহাটে ৫টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এই জেলাগুলোতে নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে মেহেরপুর জেলায় ৯টি ইউপির ৭টিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর জয় হয়েছে, ২টি পেয়েছে আওয়ামী লগি মনোনিত প্রার্থী। কুষ্টিয়ায় ১৭ ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনিত প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ৯টিতে আর বিদ্রোহীরা জিতেছে ৭টিতে। অন্যদিকে নড়াইলে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রাথীরা জিতেছে ৮টিতে, বিদ্রোহী প্রাথীরা জয় পেয়েছে ৪টিতে। এ জেলায় বিএনপি সমর্থিত ১জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। ঝিনাইদহের মহেশপুরে ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ছয়টিতে আওয়ামী লীগ ও ছয়টিতে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, খুলনায় ২৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, ১০টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং ৫টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, চুয়াডাঙ্গায় ৫টি ইউনিয়নে ৩টিতে ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, যশোরে ২০ ইউনিয়নের ৯টিতে আওয়ামী লীগে প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে, বাকি ১১টিতে জিতেছে বিদ্রোহীরা। অন্যদিকে বাগেরহাটের ৫ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।
মোট ১০৫ ইউপিতে আ’লীগ মনোনিত প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ৫২ টিতে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ৩৪টিতে। বাকিরা স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের। এর মধ্যে নড়াইলে ১ টি ইউপি গেছে বিএনপি সমর্থক এক প্রার্থীর দখলে।
বিজয়ী এসব প্রতিনিধিরা যারা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বা অন্যরা যারা পাননি সবাই স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
বিদ্রোহী প্রাথী হিসেবে বিজয়ের পর অনেকেই দলের বাইরে গিয়ে জোড়ালোভাবে কিছু বলতে না চাইলেও তারা বলছেন নিবার্চনে কেন্দ্র থেকে দেয়া মনোনয়ন পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাদের বিষয়ে সঠিক তথ্য কেন্দ্রে পৌঁছায় না। এরপরেও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের মনোনয়ন সুপারিশে রয়েছে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।
নিবার্চনের সার্বিক প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করলে আরো দেখা যায় যে, নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তারা মনোনয়ন না পেয়েই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের অনেকেই বিগত সময়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এদের মুল প্রতিদ্বন্দ্বীতাও অনুষ্ঠিত হয়েছে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর সাথে।
বিদ্রোহী এসব বিজয়ী প্রার্থীরা বলছেন নির্বাচন তাদের জন্য একেবারেই সহজ ছিল না। নিবার্চনী পরিবেশের পুরোটাই ছিল তাদের জন্য বৈরি। তারা জিতে এসেছেন কেবলমাত্র তাদের ব্যক্তি চরিত্র, সততা ও বিগত সময়ে জনগনের প্রতি তাদের ভালবাসার প্রতিদান হিসেবে।
এরকম একজন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া ইউনিয়নের আব্দুল হান্নান মন্ডল। তিনি বিগত চার বছর ঐ ইউপিতে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এবারও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু তিনি এবার মনোনয়ন পাননি। হান্নান মন্ডল জানান তার মনোনয়ন না পাওয়ার মুলে যিনি ছিলেন তার কারনেই তিনি জিতেছেন।
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন গত মাসে জেলার যুবলীগের এক র্শীষ নেতা তাকে নির্বাচনে দাঁড়ানো কারনে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পর তিনি ভোট চাইতে যেখানেই গেছেন জনগনের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। তিনি জিতেছেন। হান্নান তালিবাড়িয়া ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি।
হান্নান মন্ডলের প্রশ্ন হলো তিনি দীর্ঘ পরিক্ষিত একজন আওয়ামী আদর্শের কর্মী। তাকে মনোনয়ন না দিয়ে দেয়া হয়েছে একজন হাইব্রিড নেতাকে। এটা দিয়ে কেন্দ্র কি সিগন্যাল দিল ?
এসব নেতাদের মতে যোগ্য প্রার্থীকে অনেক ক্ষেত্রে বাদ দিয়ে দলের থেকে ব্যক্তির প্রতি বেশী আনুগত্যশীল এমন নেতাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ও তাদেরকেই তদবির করে মনোনয়ন পাইয়ে দেয়া হয়েছে।
কথা হয় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউপিতে নির্বাচনে জয়ী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে বিগত চার বছরের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদের সাথে। তিনি ফোনে জানান কেন্দ্র কি দেখে মনোনয়ন তা তিনি জানেন না। তবে তার মনে হচ্ছে প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। স্থানীয় প্রার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রের কাছে সঠিক তথ্য যাচ্ছে না।
তিনি স্থানীয় পর্যায়ের বেশ কিছু নেতার মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন।
মিরপুরের ছাতিয়ান ইউপির বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী প্রবীর বিশ্বাস মনে করেন যদি মাঠে বিরোধী দলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকতো এসব মনোনিত নেতাদের বিজয় লাটে উঠতো।
এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি জেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান বলেন তৃণমুল থেকে যাদের নাম জেলাতে আসে জেলা সেটিই কেন্দ্রে পাঠায়। কেন্দ্র এরকম তিনজনের প্রোফাইল থেকে একজনকে বেছে নেয়। এখানে ত্রুটির কিছু নেই বলে দাবি এই নেতার।
মেহেরপুর সেদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল বলেন অন্য জেলার খবর তিনি বলতে পারবেন না তবে তার মতে মেহেরপুরে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ঐ জেলার শীর্ষ নেতা এক মন্ত্রীকে তিনি দুষলেন। তিনি বলেন উনি (মন্ত্রী) খেয়াল খুশী মতো কাজ করেছেন যোগ্য প্রার্থীর ব্যাপারে তার কোন ধারনাই নেই।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net