November 21, 2024, 12:26 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ইসলাম ধর্মের উদ্ভবের পীঠস্থান সৌদি আরবে এই মুহুর্তে সিনেমা ব্যবসা রমরমা। কারন সেখানে প্রতিদিন সিনেমা দেখছেন হাজার হাজার সৌদিয়ান। প্রায় চার দশক পর ২০১৮ সালে সৌদি আরবে পুনরায় সিনেমা হল চালু করা হয়। এরপর দেশটিতে দ্রুতগতিতে সিনেমা হল ও প্রদর্শনীর স্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে সিনেমা হল খুলে দেয়ার ৬ বছরপূর্তি উদ্যাপন করেছে সৌদি আরব।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সৌদিতে সিনেমা হল রয়েছে ৬৬টি। এসব হলে রয়েছে ৬১৮টি পর্দা। ২২টি শহরজুড়ে থাকা এসব সিনেমা হলে ৬৩ হাজার ৩০০ আসন রয়েছে, যা আরব বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ছয় বছরে সৌদিতে প্রায় ১ হাজার ৯০০ সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে। যার মধ্যে ৪৫টি সৌদির নিজস্ব। এসব সিনেমা প্রদর্শনীর মাধ্যমে আয় হয়েছে ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন রিয়াল। শুধু গত বছর দেশটিতে ১৬ হাজার ৬০০ মিলিয়ন টিকিট বিক্রি হয়েছে।
সিনেমা প্রদর্শনীর পাশাপাশি সিনেমা বিষয়ক বিভিন্ন উৎসবও আয়োজন করছে দেশটি। গত সপ্তাহে দেশটিতে গালফ সিনেফা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এ মুসলিম দেশ।
গত মাসে সৌদি ফিল্ম কমিশন চীনের বোনা ফিল্ম গ্রুপের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। এর মাধ্যমে সৌদির ছবি চীনের বাজারে প্রবেশের সুযোগ পায়। চুক্তির মাধ্যমে এই দুই দেশ প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং যৌথ সিনেমা তৈরিতে অর্থায়নসহ নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন সহযোগিতার দ্বার উন্মোচন করে।
সৌদি সরকার পাঁচটি দেশে সৌদি ছবি প্রদর্শনের উদ্যোগ নিয়েছে। ‘সৌদি ফিল্ম নাইট’ নামে মরক্কো, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত ও মেক্সিকোতে সৌদি চলচ্চিত্র দেখানো হবে।
২০২১ সালে সিনেমার বাজার থেকে সৌদি আরবের আয় হয়েছে ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন হাজার ৮৫০ কোটি টাকা।
মার্কিন সাময়িকী ভ্যারাইটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৫ সালে সৌদি আরব বিশ্বের দশম বৃহত্তম সিনেবাজার হওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে— দুবাইভিত্তিক বিনোদন প্রতিষ্ঠান ‘ভক্স সিনেমা’ সৌদি আরবে নতুন নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ কার্যক্রমে ১ লাখ ১৭ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। ১৬ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালের বিনিয়োগে সিনেমা হলের সঙ্গে শপিংমল, ফ্যাশন হাউজ, বিনোদন ও দোকানপাট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যার ফলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাড়বে আরও সিনেমা হল।
এখানেই শেষ নয়, সৌদি আরব তাদের বিনোদন খাতে ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এই সামগ্রিক বিনিয়োগ আগামী দশকে এই বাজারকে আরও ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
এ ছাড়া সৌদি আরব বর্তমানে ড্যান্স মিউজিক ফেস্টিভ্যালের আয়োজনে জোর দিতে চায়। এরই মধ্যে সৌদি রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে দ্বিতীয়বারের মতো এমন একটি আয়োজন হয়েছে, যেখানে এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে ১৯৭০ সালের পর দেশটির ইসলামিক নেতারা সিনেমা হলগুলো বন্ধ করে দেন। এর পর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সেখানে কোনো সিনেমা হল ছিল না।
২০১৮ সালে সিনেমা হলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির রাজপরিবার। একই বছর ১৮ এপ্রিল রিয়াদে চালু হয় দেশটির প্রথম সিনেমা হল। অল্প দিনেই দেশটিতে বাড়ছে হলের সংখ্যা, বাড়ছে দর্শকশ্রোতাও।
Leave a Reply