December 26, 2024, 4:05 pm
ড. আমানুর আমান, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক কুষ্টিয়া/
ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর কোন কল্পনার কিছু নয় এটা অনেক আগেই সত্যি হয়েছে। কিন্তু এই সত্যি কতটা গভীর, কতটা বাস্তব এটা এখন প্রকাশ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারনা ঘোষণার পর এক যুগে বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছে। বাস্তবে শহর-গ্রামের মধ্যে কমেছে পার্থক্য। হয়েছে হাজার হাজার কর্মসংস্থান। বৈদেশিক আয়ও বাড়ছে। দেশে তৈরি হচ্ছে ৩৯টি আইটি পার্ক। ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের যাত্রা শুরু হচ্ছে। এখন প্রতিমাসে বিভিন্নভাবে ডিজিটাল সেবা নিচ্ছে প্রায় এক কোটি মানুষ। ডিজিটাল বাংলাদেশ ছিল সমৃদ্ধির এক আগাম বার্তা।
আজ থেকে ১২ বছর আগে শুরু হয় এই ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর তিনি নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিলেন, ২০২১ সালে যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবো, তখন বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের মর্যাদাশীল, প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ।
হিসেব করলে দেখা যায় সে সময় দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ ডলারের কম। আর বাংলাদেশের দারিদ্র্যসীমা ছিল ৪২ শতাংশের ওপর। বিদ্যুতের সংযোগ ছিল মাত্র ৪০ শতাংশের ঘরে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫৬ লাখ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবসাইট ছিল অল্প সংখ্যক। ১২-২০টি ওয়েবসাইট ছিল। মেইল ব্যবহারের কোনো চর্চা ছিল না। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম ছাড়া অন্য কোথাও ছিল না ব্রডব্যান্ড। গ্রাম-ইউনিয়ন তো পরের কথা, বিভাগ-জেলা সদর পর্যন্ত ২০০৯ সালের আগে কোনো ব্রডব্যান্ড সংযোগ ছিল না। ছিল না আইসিটি শিল্পের কোনো অস্তিত্ব। তরুণদের আইসিটিতে কর্মসংস্থান তো দূরের কথা, প্রযুক্তিশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পর্যন্ত ছিল না। প্রাইমারি, হাইস্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল না কম্পিউটার।
এখন আইসিটি খাতে প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ২০ লাখ। বর্তমানে আইসিটি খাতে রপ্তানি এক দশমিক তিন মার্কিন ডলার। অনলাইন শ্রমশক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশের প্রায় সাড়ে ছয় লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সার আউটসোর্সিং খাত থেকে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ৭০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। ডিজিটালের সুযোগ নিয়ে এখন ১০ কোটিরও বেশি মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং করছে।
বাংলাদেশে ৫২ হাজার ওয়েবসাইট, ৮২ হাজারের বেশি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, পৌরসভা ডিজিটাল সেন্টার, সিটি করপোরেশন ডিজিটাল সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। এখন ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, ডিজিটাল সার্ভিস, ডেলিভারি সেন্টার থেকে প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি মানুষ সেবা নিচ্ছে। আয় করছে সাড়ে ৭০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
Leave a Reply