November 22, 2024, 9:59 am
দৈনিক কুষ্টিয়া আর্ন্তজাতিক ডেস্ক/
সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের কাছে সাগরে ভাসমান প্রায় ১০০ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে এসে মানবতার পরিচয় দিয়েছে স্থানীয় জেলেরা। করোনাভাইরাস আতঙ্কে এসব শরণার্থীদের আশ্রয় না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিল কর্তৃপক্ষ।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কাঠের তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ নৌকাটিতে প্রায় ৯৪ জনের মতো রোহিঙ্গা ছিল। এর মধ্যে ৩০ জন শিশু। তারা বেশ কয়েক দিন সুমাত্রা দ্বীপের কাছে অবস্থান করছিল। কিন্তু নৌবাহীর সদস্যরা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তীরে ঘেঁষতে দিচ্ছিল না।
মিয়ানমারের নিপীড়িত এই সংখ্যালঘুদের প্রতি সরকারি কর্তৃপক্ষের এমন আচরণ নাড়া দেয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাটি তীরে নিয়ে আসে।
এ সময় সমুদ্র তীরে জড়ো হয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শী এএফপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন।
আপলেস কাউরি নামে একজন মৎস্যজীবী বলেন, “সম্পূর্ণ মানবতার কারণ আমরা এটা করেছি। সাগরে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের ভাসতে দেখে খুব খারাপ লাগছিল আমাদের।”
এই ঘটনার আগে বৃহস্পতিবারই স্থানীয় পুলিশ প্রধান একো হারতানতো জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের এই সময়ে এসব রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ারই পরিকল্পনা করছেন তারা।
এমন ঘোষণার পর স্থানীয় জনসাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করার পর অবশ্য সুর নরম হয়ে আসে কর্তৃপক্ষের। এসব রোহিঙ্গাদের আপাতত নিজেদের বাড়িতেই আশ্রয় নিচ্ছে স্থানীয়রা।
আচেহ প্রদেশের উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে, এসব রোহিঙ্গারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি-না তা যাচাইয়ে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
ভাসমান রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া স্থানীয়দের প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক উসমান হামিদ।
“এটা আচেহ সম্প্রদায়ের কৃতিত্ব। এসব ভাসমান নারী, শিশু ও পুরুষদের তীরে আনতে তারা কর্তৃপক্ষকে অনেক চাপ দিয়েছে এবং ঝুঁকি নিয়েছে। তারা মানবতার সর্বোচ্চটুকু দেখিয়েছে।”
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিদেশে পাড়ি জমানোর ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া ও পার্শ্ববর্তী মালয়েশিয়া পছন্দের ঠিকানা।
তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমার বা বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সমুদ্র পাড়ি দেন। মৃত্যু হাতে নিয়ে প্রতিবছর বিপজ্জনক সমুদ্র পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে পৌঁছাতে গিয়ে প্রাণ হারায় অনেক মানুষ।
Leave a Reply