November 22, 2024, 8:53 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
আরও ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ভারতীয় ডিম দেশের বাজারে ইউক্রেন সংঘাত আঞ্চলিক যুদ্ধ থেকে বৈশ্বিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার পথে : পুতিন ২ ডিসেম্বর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোলে যাবে ট্রেন মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা: ড. ইউনুস আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস, নানা আয়োজন ডাকাতি করতে এসে মা-ছেলেকে হত্যা, ৩ জনের মৃত্যুদন্ড র‌্যাগিংয়ে অভিযুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী কারাগারে শহরে বিশ^বিদ্যালয়ের বাসে চাপা পড়ে সাইকেল আরোহীর মৃত্যু দেশে আসছে আরো ১৯ কোটি ডিম, ৪৩ প্রতিষ্ঠানকে আমদানির অনুমতি ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানা থেকে লুট হওয়া শটগান কুষ্টিয়ায় উদ্ধার

২৮ বছরে দৈনিক কুষ্টিয়া, বাঁচার আশা নিয়ে বেঁচে থাকা

বিশেষ সম্পাদকীয়

১/ ২৮ বছরে। বয়সের ব্যাকরণ যাই-ই বোঝাক দৈনিক কুষ্টিয়া ঠিক ততোটা ফুরফুরে মেজাজে নেই। কারন দৈনিক কুষ্টিয়া যে সংগ্রামের মধ্যে বেঁচে থাকে তার পেক্ষাপট একেবারে আলাদা রকমের। তবে একেবারেই যে আনন্দ লাগছে না তা নয়। তবে এই আনন্দ খুব বেশীক্ষণ ধরে রাখা মুশকিল। কারন যেখানে বেঁচে থাকাটা একটি বিস্ময়, সেখানে বেঁচে থাকার আনন্দ উপভোগ করতে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ।

২/পত্রিকা চালানোর কাজটি সহজ নয় সেটি জানতাম। তবে কতটা কঠিন কতোটা নির্মমতা তৈরি করে সেটা বোধকরি যথাযথভাবে জানতাম না। এই অসমীচীন অজ্ঞতা প্রতিমুর্হুতেই নানা ধরনের জটিল পথ তৈরি করে অথবা পথচ্যুতই করে দেয়। এখন সবসময়ই মনে হয় কিভাবে এতটা পথ আসতে পারলাম।

৩/ আমার নিশ্চিত বিশ্বাস প্রতিদিন একটি করে পত্রিকা প্রকাশ একটি করে যুদ্ধ জয়ের অসাধ্য সাধন ; কারন সাধ্যের সীমানা যেখানে কাঁটাতার আর ঝুলকালি দিয়ে ঘেরা ; চালকের আসনটি যখন ঘেরাটোপ তখন পথ সামনে আছে কি নেই হিসাব কষা কতোটাই না বোকামী। ঠিক সেভাবেই এই যাত্রা। তারপরও সত্যের পথে সততার সাথে চলার যে বজ্রদীপ্ত অঙ্গীকার তা অব্যাহত ছিল ; বিস্ময় নিয়ে প্রতিদিন সকালে দেখি অব্যাহত থাকছেও। তবে প্রশ্ন জাগে এভাবে কতদিন ? কারন পিঠ দেনার দেয়ালে ; যা বাড়ছে জ্যমিতিক-গাণিতিক দুই হারেই প্রতিদিন। তবে সমস্যাটি যে কেবল আমাদের একার তা নয়। স্থানীয় পত্রিকা সবগুলোরই প্রায় একই দশা। বলা যায় দশার চুড়ান্ত। আয় ও ব্যয়ের বিস্তর ফারাক ; ব্যয় দিয়ে আয় মেটাতে হয়। দেনা বেচে আয় করার মতো অদ্ভুত কৌশলে চলতে হয়।

৪/প্রতিটা দিনই এক এক অভিজ্ঞতার ঝুলি। সবই সমস্যার ধারাবাহিকতা। প্রতিদিনই বিচ্ছিন্ন অনেক ঘটনাই সঙ্গী হয়। সব বলবার ইচ্ছে থাকলেও শুনবেটা কে ? যেমন ধরুন সরকারী বিজ্ঞাপন। সরকারী তালিকাভুক্তি বা সরকারী বিজ্ঞাপন রেটের দৌড়ে এই জেলায় দৈনিক কুষ্টিয়া সবার উপরে হলেও বিজ্ঞাপন ধরে আনার দৌড়ে এটি সবার পেছনে। তাই বিজ্ঞাপনের চেহারাগুলো থাকে সবসময়ই অধরা ; একেবারেই অন্যায্য বন্টন এর প্রধান কারন। অধিকারের জায়গাটি এখানে বলাৎকার হয়ে যায়। কার কথা কে শোনে ! সরকারী দপ্তর থেকে চিঠি আসে ; ব্যবস্থা নেয়া হোক। কিন্তু সেটি তো আসে আরেকটি সরকারী দপ্তরে। অবস্থার পরিবর্তন হয় না। আস্থা হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। কেউ কেউ হয় অবস্থার শিকার ; আর কেউ কেউ শিকার করে নেয় স্বয়ং অবস্থাকেই। তারপরও আছে নানা বিলি-বন্টনের ব্যাপার ; দেনদরবার। মাথা কতোটা নিচু করতে পারার ক্ষমতা ভেতরে জন্মেছে সেটার পরীক্ষা দেয়া।

৫/ যারা বিজ্ঞাপন দেন তারা কি কখনও ভেবে দেখেছেন ডিএফপির তালিকাভুক্তি টিকিয়ে রাখতে একটি ডিএফপি তালিকাভুক্ত পত্রিকার বছরে কত টাকা খরচ করতে হয় ? বছর জুড়ে পত্রিকা প্রকাশ, জনবল কাঠামো ব্যবস্থাপনা, অডিট, বাজেট, নবায়ন, ভ্যাট, ট্যাক্স, ছাড়পত্র সব মিলিয়ে যে বিশাল ব্যয় সেখানে ডিএফপির তালিকাভুক্ত নয় যাদের এগুলো কিছুই করতে হয়না এমন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দিলে ডিএফপির তালিকাভুক্ত পত্রিকাগুলো কিভাবে বেঁচে থাকবে ? এবং এ বিষয়ে একই সাথে সরকারী পরিপত্র রয়েছে স্পষ্ট। সেখানে এটি কেন ঘটে ? এটি একটি আর্থিক দুর্নীতিও বটে। তারপরও প্রিয় বিজ্ঞাপনদাতা, অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বড় লাটকেও সততার কপচানি মারতে মারতে যখন এই অকাজটি করতে দেখি তখন দুঃখ হয় ; হায়রে বিবেক কখনও দংশেনা এদের !

৬/ আমার অভিজ্ঞতা বলছে, সততা ও পাঠকের উপর নির্ভর করে স্থানীয় পর্যায় থেকে এক বা একাধিক পত্রিকা প্রকাশ একেবারেই অসম্ভব একটি চেষ্টা। পাঠক স্বল্পতা একটি চরম সমস্যা। কুষ্টিয়াতে এই সমস্যাটির চুড়ান্ত পর্যায় চলছে। অনেক গুলো পত্রিকার অসম প্রতিযোগীতা এর প্রধান কারন। ৫৫/৬০% স্বাক্ষরতার দেশে কতই বা পাঠক পাওয়া যায়। এখানে একজন পত্রিকা মালিককে সবসময়ই পাঠক খুঁজে বেড়াতে হয়। অবস্থা এমন হয়েছে যে সারামাস পত্রিকা সরবরাহ দেয়ার পর ভযে পত্রিকার বিল চাওয়া মুশকিল হয়ে দেখা দেয় কারন এতে পাঠকই বিদায় নিতে পারে।“ভিন্ন প্রক্রিয়ায়” পত্রিকা প্রকাশের নজীর দেশজুড়েই আছে। আমরাও যে সে নজীরের ভাগীদার হতে পারি না তা নয়। তবে ঐ যে সততার কথা বলেছি সেখান থেকে এই চুল নড়ার সুযোগ নেই। কারন পরাজয় বেচে বিজয় কেনার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। যে ক’দিন পারা যায় পকেটের পয়সাতেই চলবে এবং একদিন কালের যাত্রার সঙ্গী। তবে সেটা কবে এখনও জানিনা।

৭/ আমাদের ভাবনার জগত আমাদেরই সৃষ্ট ; লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, চেতানর জায়গাটি আমরা নিয়েছি এ দেশ, এ সমাজ, এ জাতি, তার সংস্কৃতি ও ইতিহাস থেকে। এ জায়গাটি হলো বাঙালী, বাংলাদেশ, মহান মুক্তিযুদ্ধ, অসা¤প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি ও সর্বোপরি স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির চেতনা। এক দীর্ঘ সময় ধরে এটিই আমাদের সকল অনুপ্রেরণা ; আমাদের এগিয়ে চলার শক্তি।

৮/দেশ এক ক্রান্তিকালে। সবাই সেলফ কোয়ারেন্টিনে। আমরাও পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে বসে আছি। পত্রিকাও সেলফ কোয়ারেন্টিনে। প্রত্যাশা করছি বিপদ কেটে যাবে। মানুষ মুক্তি পাবে।

৯/যা হোক, যাত্রা নিবির্ঘœ করতে চেষ্টার প্রাণান্ত ; তবে মরিয়া নই। কারন বৈষম্যে ভারসাম্য ধরে রাখা অসম্ভব। আবার অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো ইউটোপিয়ায় ভোগার দায় কতদিন ঘাড়ের উপর ঝুলাবো ভাবছি সেটাও।

যাহোক, এই কঠিন যাত্রায় যারা সাথে ছিলেন, থাকছেন সবার প্রতি একটিই শব্দ ‘কৃতজ্ঞ’। সততা যেখানে একমাত্র সম্বল সেখানে এটিই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। সততা বেঁচে থাকলেই সৎ মানুষেরা বেঁচে থাকবে।

আজকের এই দিনে সকল পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, সংবাদকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভানুধ্যায়ীদেরকে অনেক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।

যাদের কথা না বললেই নয় ‘বিনালাভে বেশী শ্রম দিয়ে থাকেন’—–সেই শ্রদ্ধেয় সকল কলাকুশলী ; ডাকলেও আসেন তারা না ডাকলেও আসেন। যারা প্রতিনিয়তই আলো জ্বালিয়ে বসে থাকেন অফিসে; আমার তারা ; খুবই কাছের মানুষগুলো—-একদিন সবকিছু থেমে গেলেও যাদের নাম মনে থাকবে—-তাদের প্রতি রইল সবোর্চ্চ কৃতজ্ঞতা।

সবাই ভাল থাকবেন।

সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর

দৈনিক কুষ্টিয়া

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
      1
30      
1234567
891011121314
15161718192021
293031    
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net