March 17, 2025, 5:21 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
আবরার হত্যা/২০ জনের মৃত্যুদন্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল যুগেরও বেশী সময়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এবারও ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন মাগুরায় আছিয়ার পরিবারকে ‘পাকা বাড়ি’ করে দিবে জামায়াত বড়দের সঙ্গে পাঙ্গা নেওয়া যাবে না, ইউক্রেনকে ট্রাম্প মধ্য মৌসুমেই পড়তে থাকে দাম/ উৎপাদিত সবজির দামে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খরচ উঠছে না প্রান্তিক কৃষকদের প্রফেসর আরেফিন সিদ্দিক আর নেই নির্মম ধর্ষণের শিকার মাগুরার সেই শিশুটি না ফেরার দেশে সামরিক কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়ল আরও ৬০ দিন জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল: মাহফুজ আলম যশোরে আলুর ফলন বেড়েছে, কৃষকরা ভাল করেছেন আলু বীজেও

মৃত্যুর চোখে চোখ রেখে চলে গেলেন বলিউড অভিনেতা ইরফান খান

দৈনিক কুষ্টিয়া বিনোদন ডেস্ক//*/

মৃত্যুর চোখে চোখ রেখে চলে গেলেন তিনি। এভাবে লড়াইটাও চলছিল। ভুগছিলেন মস্তিষ্কের এক বিশেষ ধরনের ক্যান্সারে। কিন্তু শেষমেশ লড়াইটা হেরেই গেলেন ইরফান খান। বুধবার সকালে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে মৃত্যু হল ৫৩ বছর বয়সী এই অভিনেতার। মাত্র চার দিন আগেই জয়পুরে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর মায়ের।

লকডাউনের কারণে সেখানে পৌঁছতে পারেননি ইরফান। তবে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি, অসুস্থতার জন্যই মায়ের শেষকৃত্যে যেতে পারেননি অভিনেতা। ব্রেনে টিউমার নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে লড়াই করেছেন তিনি। সুস্থ হয়ে ‘আংরেজি মিডিয়াম’ ছবির মধ্যে দিয়ে কামব্যাকও করেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে ভর্তি হন কোলন ইনফেকশন নিয়ে। আজ সকালে হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। দুই ছেলে আর আর স্ত্রীকে রেখে ইরফান পাড়ি দিলেন নতুন দুনিয়ায়।

ইরফান ১৯৬৭-র ৭ জানুয়ারি ভারতের জয়পুরে একটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইরফানের মা ছিলেন বেগম খান এবং তাঁর বাবা ছিলেন জাগিরদার খান। তঙ্ক জেলার বাসিন্দা। তিনি পাগড়ির ব্যবসা করতেন। তিনি ১৯৮৪ সালে নয়া দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি) থেকে স্কলারশিপ অর্জন করেন, এর সঙ্গেই ছিল এমএ পড়া।

বড় হয়ে ইরফান খান প্রথমে ক্রিকেটার হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তার পর ছোটখাট ব্যবসার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এরপর তিনি এম.এ কোর্সে ভর্তি হলেন। এম.এ কোর্সে পড়াশোনা চলাকালীন সময়েই ১৯৮৪তে ইরফানের কাছে আসে এক সুবর্ণ সুযোগ। তিনি নিউ দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ সহ সুযোগ পেয়ে যান। সেখান থেকে তিনি ড্রামাটিক আর্টসে ডিপ্লোমা করেন।

ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে পাশ করার পর ইরফান খান মুম্বইয়ে চলে এলেন। এখানে এসে তিনি টেলিভিশন সিরিয়াল দিয়ে নিজের কেরিয়ার শুরু করলেন, যদিও প্রথম দিকে তাঁকে যথেষ্ট কষ্ট করতে হয়েছে। তিনি প্রথমদিকে টিউশন করে এবং মেকানিক হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন। মুম্বই তাঁকে অন্য ক্ষেত্র দিন। একে একে অভিনয় করলেন ‘চাণক্য’, ‘ভারত এক খোঁজ’, ‘সারা যাঁহা হামারা’, ‘বানেগী আপনে বাত’, ‘চন্দ্রকান্ত’, ‘শ্রীকান্ত’।

স্টারপ্লাসের ‘ডর’ নামক এক সিরিজের প্রধান ভিলেন ছিলেন ইরফান। এতে তিনি কে কে মেননের বিপরীতে এক সাইকো সিরিয়াল কিলারের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯৮৮ সালে এসে তাঁর কেরিয়ার এক নতুন মোড় নেয়। ডিরেক্টর মিরা নায়ার তাঁকে ‘সালাম বম্বে’তে একটি অতিথি চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব করেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল তার চরিত্রের অংশবিশেষ শেষ পর্যন্ত ফিল্মের এডিটিংয়ে বাদ চলে যায়। এর পর আর পিছন ফিরে তাকাননি শাহাবজাদে ইরফান আলি খান।

আজ আর তিনি নেই। শুন্য বলিউডের প্রান্তর। আজ তাঁর কাছে কেউ পৌছতেই পারবে না। সবকিছুকে দূরে সরিয়ে রাখলেন এই যোদ্ধা? অদ্ভুত এক শুন্যতা বিশ্বের স্টুডিয়ো পাড়ায়। বলিউডের খান সাম্রাজ্যে তিনি যেন ভিন্ন তারা। পাশের বাড়ির ছেলে। লাউড অভিনয়, নায়িকার কোমর ধরে নাচ, ফর্সা সিক্স প্যাক- না কোনোকিছুকেই সঙ্গে নিয়ে রণভূমিতে অবতরণ করেননি এই অভিনেতা।ইরফানের পরিচালকেরা স্বীকার করেছেন তার অভিনয়ের ক্রাফট ছিল আলাদা। শুধুমাত্র অভিনয় শিক্ষার পারদর্শিতায় তিনি দেখিয়েছেন হিরো নয় সিনেমা চায় অভিনেতা। রক্তমাংসের একজন মানুষকে। যে অনায়াস দক্ষতায় বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পারে চরিত্রকে। পরে তার অভিনয় অসম্ভব সাড়া ফেলে অন্য একটি ছবিতে – “এক ডক্টর কি মউত”। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। একের পর এক উদাহরণ দেওয়া যায়। শেক্সপিয়ারের ম্যাকবেথের অবলম্বণে “মকবুল”, ‘রোগ’, ‘হাসিল’, ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’, ‘দ্য নেমসেক’ তালিকা লম্বা হতেই থাকে। ডাক আসে হলিউডের। ‘আ মাইটি হার্ট’, ‘দ্য দার্জিলিং লিমিটেড’ তার যোগ্যতার মাপকাঠি তৈরি করে দেয়। যদিও নিজের উচ্চতাকে তিনি নিজেই ছাড়িয়ে গেছেন বারবার। ড্যানি বয়েল পরিচালিত “স্লামডগ মিলিনিয়ার” এর ছবির জন্য অস্কার পান তিনি। অস্কার এনে দেয় “লাইফ অফ পাই” ছবিটিও। “পান সিং তোমার”, “লাঞ্চবক্স”, “পিকু” ছবির জন্যও দর্শকের প্রিয় হয়ে ওঠেন ইরফান। গল্প নয়, যেন ইরফান থাকলেই ছবি সফল। আজকের কন্টেন্ট নির্ভর দুনিয়ায় ইরফান এক ব্যাতিক্রম হয়ে ওঠেন। তাঁর না অভিনয় আজ বিশ্ব অভিনয় ক্রাফটে সমাদৃত।

৩৫ বছরের কর্মজীবনে তিনি ৫০টির অধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও চারটি ফিল্মফেয়ার-সহ অর্জন করেছেন অসংখ্য পুরস্কার। চলচ্চিত্র সমালোচক, সমসাময়িক অভিনয়শিল্পী ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা তাকে ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী বলে গণ্য করেন। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’তে ভূষিত করে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net