August 20, 2025, 5:19 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
২০২৬ সালে তা নবায়ন হওয়ার কথা/গঙ্গা চুক্তিতে থাকতে চায় তৃণমূল, নেপথ্যে কি? আমদানি শুরুর পর দাম বাড়েনি পেঁয়াজের বেসরকারি পর্যায়ে ১০ লাখ টন ডাল ও চিনি আমদানি অনুমোদন কুষ্টিয়ায় কারাগারে হাজতির মৃত্যু কুষ্টিয়ায় পদ্মা ও গড়াইয়ে পানি কমলেও দৌলতপুরে অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দি কুষ্টিয়া শাহিন ক্যাডেট স্কুল/ ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল রেসিং খেলতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যু ঝিনাইদহে সীমান্ত অতিক্রমের অভিযোগে ১৭ জন আটক রাজশাহীতে একই পরিবারের চারজনের রহস্যজনক মৃত্যু র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে কুষ্টিয়ায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার

ঘরে থেকে ঈদে আনন্দ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

দৈনিক কুষ্টিয়া ডিজিটাল ডেস্ক/
ঈদের আনন্দ ঘরে থেকেই উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পতিরোধে এটাই সর্বোত্তম পত বলে অভিহিত করেন। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণের শেষে বলেন, আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন। ঘরে বসেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করুন।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা নামক এক প্রাণঘাতী ভাইরাস সারা বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তার উপর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এ বছর সব ধরনের গণ-জমায়েতের উপর বিধিনিষেধ আরোপের ফলে স্বাভাবিক সময়ের মতো এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করা সম্ভব হবে না। ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বছর আমরা সশরীরে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হতে বা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে না পারলেও টেলিফোন বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনের খোঁজখবর নেব।
বাংলাদেশে মার্চে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এ পর্যন্ত সরকার ও দেশের জনগণ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা চিকিৎসা সক্ষমতা অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছি। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাসপাতালকেও আমরা করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সম্পৃক্ত করেছি। জরুরিভিত্তিতে দুই হাজার ডাক্তার এবং ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ইততিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। হাসপাতালগুলোতে সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এসব কর্মহীন মানুষের সহায়তার জন্য সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খাদ্য সহায়তা ছাড়াও দেওয়া হচ্ছে নগদ অর্থ। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৭ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৯১ কোটি ৪৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ১০ কেজি টাকা দরে বিক্রির জন্য ৮০ হাজার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মে মাসে দরিদ্র পরিবারের জন্য অতিরিক্ত ৫০ লাখ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে যার মাধ্যমে তারা এ চাল কিনতে পারবেন। কাজ হারিয়েছেন কিন্তু কোনো সহায়তা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত নন এ ধরনের ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে মোট ১২ শো ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য দু-দফায় ১৭ কোটিরও বেশি এবং সারা দেশের মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনদের জন্য ১২২ কোটি ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সহায়তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, ততদিন এসব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। অনেক সদাশয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দরিদ্র জনগণের সহায়তায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণে এগিয়ে এসেছেন। আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং উৎপাদন ব্যবস্থাকে পুনরায় সচল করতে আমরা ইতিমধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। যা জিডিপি’র ৩.৬ শতাংশ। রপ্তানিমুখী শিল্প, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কৃটির শিল্প, কৃষি, মৎস্যচাষ, হাঁসমুরগী ও পশুপালন খাতসহ ১৮টি অর্থনৈতিক খাতকে এসব প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কাজ হারানো যুবক ও প্রবাসী ভাইবোনদের সহায়তার জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনকে ৫০০ কোটি টাকা করে সর্বমোট ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই দুর্যোগ মুহূর্তে বোরো ধানের বাম্পার ফলন আমাদের জন্য আর্শীবাদ হয়ে এসেছে। এ বছর প্রায় ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। ইতোমধ্যে বোরো ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ। এই দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য আমি কৃষক ভাইবোন এবং কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন ও ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা যাতে ধানের ন্যায্য মূল্য পান সে জন্য ইতিমধ্যেই আমরা ধান-চাল সংগ্রহ শুরু করেছি। চলতি মৌসুমে ২২ দশমিক ২৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে যা গত বছরের তুলনায় ২ লাখ মেট্রিক টন বেশি। ধান কাটা-মাড়াইয়ে সহায়তার জন্য আমরা কৃষকদের ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন্ড হারভেস্টর এবং রিপার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। এজন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
শেখ হাসিসনা বলেন, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম ধান কাটা-মাড়াইয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে। আমার নির্দেশ শিরোধার্য্য করে নিয়ে তারা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধান কাটায় সহায়তা করেছে। এ জন্য কৃষকদের কোন অর্থ ব্যয় করতে হয়নি। কৃষকেরা দ্রুত ধান ঘরে তুলতে পেড়েছেন। আমি এসব ছাত্রলীগকর্মীসহ যারা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য বিশেষ তহবিল বাবদ ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা কার্যকর করা হয়েছে। যাঁরা কাজে যোগ দিতে পারেননি, তাঁরাও শতকরা ৬০ ভাগ বেতন পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বেতনভাতা পরিশোধ করা শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে মালিকদের আয় যেমন বন্ধ হয়েছে, তেমনি কর্মচারীরাও বিপাকে পড়েছেন। বেশিরভাগ দোকান মালিকের কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net