November 14, 2024, 1:38 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়নপুর গ্রামের শিশু সানজিদার হত্যাকারী কিশোরী ফুফু সুমনাকে সংশোধনাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) তাকে বাগেরহাটের কিশোরী সংশোধনাগারে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্বব্দ্যিালয় থানার অফিসার ইনর্চাজ মোস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে পুলিশ নিশ্চিত হয় ননদের প্রেম নিয়ে কথা বলা-ই কুষ্টিয় সদর উপজেলার হরিনারায়নপুর গ্রামের শিশু সানজিদার হত্যার কারন এবং ঐ কিশোরীটিকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার তাকে কুষ্টিয়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে নেয়া হলে কশোরীটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দয়ে আদালতে। আদালত তাকে সংশোধনাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। সে অস্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
গত রবিবার দুপুরে সুমনার প্রেম নিয়ে কটূক্তি করায় ভাবিকে শিক্ষা দিতে ভাতিজি সানজিদা খাতুনকে (৬) শ্বাসরোধে হত্যা করে কিশোরী ফুফু। রোববার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর এলাকায় মাঠের পাশের একটি পরিত্যক্ত শৌচাগার থেকে সানজিদার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সানজিদা সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর এলাকার সোহাগ হোসেনের মেয়ে। বাড়ি থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে তাকে হত্যা করা হয়।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত জানান, ঘটনার পরপরই মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান ও আতিকুর রহমান (সদর সার্কেল) ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করেন। একটানা ৯ ঘণ্টা কাজ শেষে রাত ৩টার দিকে তারা নিশ্চিত হন- শিশুটির আপন ফুপু এ হত্যাকান্ডর সঙ্গে জড়িত। তাকে রাতেই আটক করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আতিকুর রহমান জানান পরিবারের সব সদস্যকে বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের সারাদিনের চাল-চলনের বিষয়ে নানা কথা শোনা হয়। এ সময় পরিবারের সব সদস্যই স্বাভাবিক আচরণ করছিলো। রাত ১২টার দিকে ওই এলাকার এক মাইক্রোবাসচালক আকতার হোসেন পুলিশকে জানান যে, ওই বাড়ির এক কিশোরীকে তিনি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মাঠের পাশের পরিত্যক্ত শৌচাগার থেকে বের হতে দেখেছেন। এ তথ্য পাওয়ার পর সানজিদার কিশোরী ফুপুকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে সে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
পুলিশের দাবি, ঘাতক কিশোরী ফুপু তাদের জানায় যে, সানজিদার মা তার (কিশোরী) প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সব সময় কটূক্তি করতেন। ঘটনার দিন সকালেও সানজিদার মায়ের সঙ্গে ওই কিশোরির কথাকাটাকাটি হয়। সানজিদার মাকে শিক্ষা দিতেই সে এই হত্যার পরিকল্পনা করে।
ওইদিন বিকেলে চানাচুর কিনে খাওয়ার জন্য সানজিদাকে সঙ্গে নিয়ে সে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ভূমি কার্যালয়ে যায়। সেখানে দুজন মিলে চানাচুর খায়। এরপর শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করে মরদেহ ওই পরিত্যক্ত ভূমি কার্যালয়ের বাথরুমে রেখে বাড়িতে ফিরে আসে।
সানজিদার বাবা সোহাগ হোসেন বলেন, সানজিদা দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে। একপর্যায়ে মেয়ের সন্ধান চেয়ে বিকেলে হরিনারায়ণপুর বাজারে মাইকিং করেন। এরপরও হদিস মেলেনি। সন্ধ্যার পর এলাকার কয়েকজন কাচারি মাঠের পাশের পরিত্যক্ত শৌচাগারে শিশুটির মরদেহ পড়ে থাকার খবর দেয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ওই কিশোরীও ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে।
Leave a Reply