August 2, 2025, 11:48 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা ধানের রেকর্ড উৎপাদন, আমদানিও প্রচুর তবু চালের দাম বেড়েছে ১১%-১৬%

চির বিদায় নিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবদুল মুহিত, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর শোক

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
মারা গেছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
খ্যাতনামা এ রাজনীতিক ও অর্থনীতিবিদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক জানিয়েছেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বছর করোনায় আক্রান্ত হলে ওই বছরের ২৯ জুলাই তাকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। পরে তিনি করোনামুক্ত হয়ে বাসায় ফেরেন। এরপর থেকেই তিনি শারীরিকভাবে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েন।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মুহিত ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একাধারে লেখক, কূটনীতিক ও গবেষক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
১৯৩৪ সালে সিলেটের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মুহিত। তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা আবু আহমদ আবদুল হাফিজের দ্বিতীয় ছেলে মুহিত। তার মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরীও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করার পর অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ডে উচ্চশিক্ষা নেন মুহিত। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার পর তখনকার পাকিস্তান এবং পরে স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো, মুহিত তখন ওয়াশিংটন দূতাবাসে কূটনৈতিক দায়িত্বে ছিলেন। জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন তিনি।
১৯৭২ সালে পরিকল্পনা সচিবের দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭৭ সালে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগের সচিব হন মুহিত। ১৯৮১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে ‘অর্থনীতি ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে’ কাজ শুরু করেন ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও আইএফএডি-তে।
১৯৮২-৮৩ সালে তখনকার এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে আসেন মুহিত। দীর্ঘদিন বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কাজ করার পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি পান অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তার কাঁধেই রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোট ১২ বার ও টানা ১০ বার বাংলাদেশের বাজেট ঘোষণা করার রেকর্ড গড়েন মুহিত।
মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনীতি নিয়ে ৩০টির অধিক বই লিখেছেন মুহিত। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মুহিতকে ২০১৬ সালের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কারে’ ভূষিত করে সরকার।

পাক সরকারের পক্ষ ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়েন মুহিত/
১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ওই সময় রণাঙ্গনে লড়াইয়ের পাশাপাশি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল বহির্বিশ্বে বাঙালির স্বাধীনতার পক্ষে জনমত ও কূটনৈতিক সমর্থন আদায়। আর এ কাজটি করতে যারা অসীম সাহসে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন, তাদের একজন ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত, যিনি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায়।
জানা যায়, ১৯৫৬ ব্যাচের সিএসপি কর্মকর্তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে ইকোনমিক কাউন্সিলরের দায়িত্বে ছিলেন মুহিত। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ১৯৭১ সালের ৩০ জুন পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করেন মুহিত। এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরি ও সমর্থন আদায়ে নেমে পড়েন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে যোগাযোগ করে সমর্থন আদায় করতে থাকেন।
ওই সময়ের ভূমিকার জন্য গর্ববোধের কথা বিভিন্ন সময় বলেছেন মুহিত। তিনি বলে গেছেন, সেই ভূমিকা রাখতে পারা তার জন্য সৌভাগ্যের ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net