August 1, 2025, 1:55 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা ধানের রেকর্ড উৎপাদন, আমদানিও প্রচুর তবু চালের দাম বেড়েছে ১১%-১৬% যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির চাপ, এডিবি পূর্বাভাসে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমার শঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ/বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিয়ে নতুন রিপোর্ট প্রকাশ রাজবাড়ীতে পদ্মায় ভাঙন/নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি

বোরো’র হিট ইনজুরি ঠেকাতে জিকে সেচ এলাকায় বাড়তি সর্তকতা

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বাড়তি তাপমাত্রায় হিট ইনজুরির ঝুঁকিতে পড়ে যাওয়া বোরো ধানের ফলন রক্ষায় সর্তকতা হিসেবে পদক্ষেপ গ্রহন করেছে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ, জিকে। প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলছেন এইমুহুর্তে জিকের আওতায় বড় ধরনের ক্ষতির ঝুঁকি না থাকলেও হিট ইনজুরির পরবর্তী প্রভাব মোকাবেলায় বাড়তি পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। গত ১৫দিন ধরে সারাদেশেই এই বাড়তি তাপমাত্রা অব্যাহত রয়েছে।
জিকে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন সেচ নিয়ে প্রকল্পের আওতার কৃষকরা ইতোমধ্যে বোরো রোপণ সম্পন্ন করেছে। চলছে ধানের পরিচর্যা। কোথাও কোথাও ধানে ফুল ফোটার সময় এসে গেছে। কোথাও কোথাও ধানের পুর ফুটেও গেছে। এই সময়ে আবহাওয়ায় বাড়তি তাপমাত্রার কারনে ধান গাছ হিট ইনজুরির শিকার হতে পারে। এর ফলে ধানের ফুল পুড়ে গিয়ে ধানের দানা চিটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
১৯৫৪ সালে পদ্মার পানির ওপর নির্ভরশীল দেশের বৃহত্তম এই সেচ প্রকল্পটি চালু হয়। সেচ প্রকল্পের প্রধান পয়েন্ট কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পানি সংরক্ষণ খাল থেকে ঝিনাইদহ হয়ে মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর পানি সরবরাহের শেষ পয়েন্ট পর্যন্ত ১৯৪ কিলোমিটার প্রধান খাল রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় দুটি মৌসুমে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার এক লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। এই চার জেলার মোট ১৩টি উপজেলায় এই কার্যক্রম বিস্তৃত।
জিকের কর্মকর্তারা বলছেন দুটি বোরো মৌসুমের একটি শুরু হয় নভেম্বর (কার্তিক-অগ্রহায়ণ) মাসে। আর শেষটা হয় এপ্রিল-মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসে। তারা জানান, প্রতিবছর জানুয়ারির মধ্যভাগ থেকে শুরু হয় প্রকল্পের পানি সরবরাহ। চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি সেচ পাম্প চালু করা হয়েছিল। সেখানে ৬টি পাম্প রয়েছে। এই পাম্পগুলো একযোগে প্রতি সেকেন্ডে এক হাজার ২০০ কিউসেক পানি সরবরাহ করতে সক্ষম। চালুর পর থেকে পাম্পগুলো ১০ মাস নিরবচ্ছিন্নভাবে চালানো হয়।
সেচ প্রকল্পের পাম্প হাউসে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান ‘গত এক সপ্তাহ ধরে জিকের ইনটেক চ্যানেলে পানি পাওয়া গেছে চার দশমিক এক থেকে চার দশমিক ১৮ মিটার। কিন্তু বর্তমানে প্রকল্পের পানি উত্তোলনের ৪টির মধ্যে তিনটি পাম্পই বিকল হয়ে রয়েছে। ফলে একটি পাম্প দিয়ে ১০ ঘন্টা পানি উত্তোলন করতে হচ্ছে।
তিনি জানান, ‘জিকে পাম্পে পানি আনতে পদ্মা নদী থেকে প্রায় দুই কিলোমিটারের একটি ইনটেক চ্যানেলের সহায়তা নিতে হয়। চ্যানেলে এই মুহুর্তে যথেষ্ট পানি রয়েছে। একটি পাম্প দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ কিউসেক পানি উত্তেলন করা হচ্ছে। এই পানি সুষম আকারে জিকের ১৯৪ কিলোমিটার খালে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ঐ নির্বাহী প্রকৌশলী জানান এর বাইরেও বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা পানির একাধিক বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
প্রকল্পের ধান বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বোরো ধানের হিট ইনজুরি সহনীয় মাত্রা হলো ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আদ্রতা সহনীয় পরিমাণ ৩০ শকাংশ। কিন্তু এই মুহুর্তে সারাদেশেই প্রায় তাপমাত্র চলছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস’র উপরে এবং বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ প্রায় ৪৪ শতাংশ। তারা বলছেন মাত্র কয়েক ঘন্টার এই ধরনের বাড়তি তাপমাত্রায় বোরো ধান হিট ইনজুরির শিকার হয়ে যেতে পারে। দেশে ২০২১ সালে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। ওই বছর প্রায় অর্ধলাখ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলছেন হিট ইনজুরি মোকাবেলার প্রধান উপায় হচ্ছে জমিতে সবসময়ের জন্য শুণ্য থেকে দুই-তিন ইঞ্চি পানি রাখতে হবে। এটা অব্যাহত রাখতে হবে বেশ কয়েকদিন। বিশেষত ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত।
কুষ্টিয়ার দৌলগপুর উপজেলার কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা আব্দুল আলিম সুমন জানান দৌলতপুর উজেলার বেশ কিছু এলাকা নদীচরবর্তী হওয়ার কারনে এসব এলাকায় বোরোর হিট ইনজুরি হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষত উপজেলার ফিলিপনগর, হোগলবাড়িয়া, আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের কিছু কিছু মাঠে পানি ঠিকমতো ধরে রাখা যাচ্ছে না। এলাকাগুলো নদীতীরবর্তী।
তিনি জানান তারা কৃষকদের কিছু পরামর্শ দিচ্ছেন। যেমন ধানে পরাগায়ন হওয়া ধানে বিকেলবেলার দিকে পানির সাথে নাইট্রোজেন সার, পটাশ বা জিংক মিশিয়ে ¯েপ্র করতে বলছেন।
জিকে সেচ প্রকল্পের আওতায় চাষ করেন খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামের কৃষক জব্বার শেখ জানান তিনি ধান ক্ষেতে প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছেন। কিন্তু তিনি আশঙ্কা কাটাতে পারছেন না। তার ভয় হচ্ছে তার ধান কেবল থোড় পর্ডন্ত হয়েছে। শীঘ্রই ফুল ফুটবে। াতান বলেন তিনি ভয় দুর করতে নিয়মিত নাইট্রোজেন ¯েপ্র করছেন। রমানাথপুর মাঠের অনেক কৃষকই এমনটা করছেন।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. হায়ত মাহমুদ জানান হিট ইনজুরির একমাত্র প্রতিরোধক হচ্ছে ধানগাছের গোড়া প্রয়োজনীয় পানিতে সবসময়ের জন্য ভিজিয়ে রাখা।
তিনি জানান কুষ্টিয়া সহ আশেপাশের কোন কোন জায়গায় পানির লেয়ার অতিরিক্ত নিচে নেমে যাওয়ার কারনে সমতল স্তরের পানির অতিরিক্ত ডিহাইড্রেশন ঘটছে। আলচ্য বিষয়ে এটা একটা খারাপ দিক। কারন এটা হলে গরম বাতাসের কারণে ধানের শীষ থেকে পানি বেরিয়ে যাবে। তারপরও অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তারা কৃষকদের কাছে যাচ্ছেন। তাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছেন।
জিকে সেচ প্রকল্পকে যে কোন মূল্যে পানি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net