March 24, 2025, 6:44 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় জাসদ নেতা সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন হাসনাতের বক্তব্য ‘অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার’: নেত্র নিউজকে বলল সেনাসদর কুষ্টিয়ার সড়কে ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত ৪ জনের- ২ জনের মৃত্যু বিশ্ব পানি দিবস আজ ইসরায়েলের হামলায় পূর্ণ সমর্থন আমেরিকার ঝিনাইদহে বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা, অভিযোগ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে সুখী দেশের তালিকায়/১৪৭ দেশের মধ্যে ১৩৪তম বাংলাদেশ চলমান বৃষ্টিবলয়/ কুষ্টিয়ায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ এলাকায় সক্রিয় থাকবে, চলবে ৩/৪দিন বেনাপোল দিয়ে ফিরলেন ভারতে পাচার হওয়া ২১ কিশোর-কিশোরী দেশে খাদ্যের মজুত বৃদ্ধিতে ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ মানুষকে ধোঁকা দেওয়া ও বোকা বানানোর অপচেষ্টা: টিআইবি

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪’র ব্যাপক সমালোচনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে ‘প্রস্তাবিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’—বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ সমালোচনা করা হয়।
বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪—এ সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়া ও বোকা বানানোর একটি অপচেষ্টা অবলম্বন করা হয়েছে বলে মনে করছে
সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ সম্পর্কে পর্যালোচনা ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার আইন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ এরশাদুল করিম।
তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্র মারফত আমরা জেনেছি যে, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ ইতিমধ্যে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন লাভ করেছে। আমরা গভীর হতাশা এবং উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, জনসাধারণের মতামত দেওয়ার জন্য আলোচ্য অধ্যাদেশের যে খসড়া প্রচার করা হয়েছিল, তার বাইরে অনুমোদন পাওয়া অধ্যাদেশে এমন নতুন অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা আইন প্রণয়নের সাধারণ চর্চার পরিপন্থী। ব্যাপারটিকে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়া ও বোকা বানানোর একটি অপচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’
এরশাদুল করিম আরও বলেন, ‘অধ্যাদেশের সাধারণ পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আমরা মনে করি—এই অধ্যাদেশে সাইবার নিরাপত্তা, সাইবার অপরাধ, সাইবার সুরক্ষা এবং মানুষের মত প্রকাশের অধিকার সম্পর্কিত বিধানগুলো একত্র করে ফেলেছে এবং অধ্যাদেশ প্রণয়নের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কেবলমাত্র কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিয়ে “জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি” গঠন প্রস্তাব করে ভবিষ্যতে এর প্রকৃত ও যথাযথ প্রয়োগকে প্রশ্নবিদ্ধ ও দুর্বল করে ফেলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান অধ্যাদেশে যে বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়গুলোকে যথাযথভাবে আইনি কাঠামোর মধ্যে বিবেচনা করার জন্য কমপক্ষে তিনটি আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। যথা—১. কম্পিউটার বা সাইবার অপরাধ বা কম্পিউটার অপব্যবহার আইন, যেখানে কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের অপরাধ-সম্পর্কিত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ২. সাইবার নিরাপত্তা, যা মূলত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোগুলো তথ্য ব্যবস্থার সুরক্ষার নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে বিধান করে প্রণীত হবে এবং ৩. অনলাইন সুরক্ষায় আইন, যা অনলাইনে বা সাইবার জগতে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা-সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিধান অন্তর্ভুক্ত করবে।’
তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে প্রথম দুটি বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে কোনো দ্বিমত বা সমালোচনা হয় না বিধায় আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এই আইনগুলো প্রথমে করে ফেলা যেতে পারে। কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতা-সম্পর্কিত বিষয়গুলো কিছুটা জটিল এবং সংবেদনশীল বলে ওই বিষয়ক আইন করার আগে সরকার ও নীতি নির্ধারকদের উচিত তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত করে তাদের মতামত নিয়ে তারপর আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।’ ’
সরকারি তথ্য, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক তথ্য ও জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আইনি কাঠামো ঠিক করা না হলে সাইবার সুরক্ষার বিষয়টি কোনোভাবেই সম্পূর্ণ হবে না উল্লেখ করে এরশাদুল করিম বলেন, ‘এ কারণে আমরা মনে করি যে, এই অধ্যাদেশটিকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারার অসংগতি তুলে ধরা হয়। ধারা-৪৬ সম্পর্কে বলা হয়, এই ধারার অধীনে ধারা ১৯-কে আমলযোগ্য এবং অ-জামিনযোগ্য করা হয়েছে। কিন্তু আমরা মনে করি, ধারা ১৯ (১) এর দফা (ঙ) ও (চ) পুনর্বিবেচনা করা উচিত। এই বিধান গুলোতে অন্তর্ভুক্ত কাজগুলো একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারীর জন্য বিরক্তিকর হতে পারে, কিন্তু এগুলো সাধারণত কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা সাইবার জগতের ভৌত অবকাঠামোর ক্ষতি সাধন করে না বলে, এগুলোকে ভিন্ন অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে এগুলোও অ-আমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য করা যুক্তিযুক্ত।
ধারা ৪৭ সম্পর্কে বলা হয়, তাত্ত্বিকভাবে সাইবার জগৎ বলতে আমরা সাধারণত একটি কাল্পনিক জগৎকে বুঝে থাকি, সে কারণে এই ধারাতে ব্যবহৃত ‘সাইবার উপকরণ’ বলতে যে বিষয়টির অবতারণা করা হয়েছে, তা না বলে শুধুমাত্র ‘উপকরণ’ বলা যেতে পারে এবং তা বলা হলে এই ধারার মূল বক্তব্যে কোনো হের-ফের হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ বাতিল করে এর পরিবর্তে নতুন একটি অধ্যাদেশ করার উদ্যোগকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু আইন অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় তড়িঘড়ি করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াটা আমরা সমর্থন করি না।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এটার প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে আমাদের আপত্তি আছে। এ ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করা হয়েছে। অন্তর্র্বতী সরকারের কাছ থেকে আমরা এমনটা আশা করি না। এই ধরনের আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে আইন কমিশনকে কেন এখানে সম্পৃক্ত করা হলো না?’
অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটা একটা জগাখিচুড়ি আইন হয়েছে। যার ফলে সাইবার সুরক্ষার নামে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন ও সাইবার সিকিউরিটি আইনের পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে পাই। অধিকারভিত্তিক কিছু আমরা এই অধ্যাদেশে দেখতে পাই না। বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এটা জনস্বার্থের প্রতিফলন করবে না, বরং বাক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে বলে আমরা মনে করি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—টিআইবির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিরেক্টর মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net