November 13, 2025, 12:00 pm

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম এবং তার স্ত্রী মোছাঃ বানু ইসলাম-এর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ প্রাথমিক তদন্ত শেষে বুধবার (১২ নভেম্বর) কুষ্টিয়া দুর্নীতি দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলাগুলো দায়ের করেন।
ক্ষমতার অপব্যবহারে কোটি টাকার সম্পদ/
দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম (৭১) জেলা পরিষদের দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের বাইরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
প্রাথমিক যাচাই অনুযায়ী, তার বৈধ আয় ৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৮৮ টাকা, আর পারিবারিক ব্যয়সহ মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ৭ কোটি ৭ লাখ ৯৫ হাজার ৪০৫ টাকা। অর্থাৎ বৈধ আয়ের তুলনায় অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার ২১৭ টাকা।
দুদক জানিয়েছে, রবিউল ইসলাম তার সরকারি পদমর্যাদা ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে এসব সম্পদ গোপনে অর্জন করেন এবং এর একটি অংশ স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ করেন। কমিশনের স্মারক নং ০০.০১.৫০০০.৭০৪/০৩/০০৪.২৪-৭৪৮ অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা অনুসারে মামলা রুজুর সুপারিশ করা হয়।
স্ত্রীর নামে সম্পদ: বানু ইসলামের বিরুদ্ধেও মামলা/
দুদকের আরেকটি মামলায় বলা হয়েছে, রবিউল ইসলামের স্ত্রী মোছাঃ বানু ইসলাম (৬৫) নিজের নামে ১ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন, যা বৈধ আয় উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, এসব সম্পদ মূলত রবিউল ইসলামের আয়বহির্ভূত অর্থ থেকেই ক্রয় করা হয়েছে। দুদকের মতে, এটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তদন্ত ও প্রভাব
দুদক জানিয়েছে, এই দুই মামলার ঘটনাগুলোর সময়কাল ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে শুরু। তদন্তের সময় অন্য কোনো সম্পদ বা ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদের সাবেক এই প্রভাবশালী দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা রুজুর খবরে কুষ্টিয়ার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকে মনে করছেন, এই মামলাগুলো জেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।