December 28, 2024, 2:46 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী সুজন মালিথাকে ২০১৯ সালে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার তানভীরকে জেলে প্রেরণ করেছে কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুুদা খাতুন আজ (বৃহস্পতিবার) এ আদেশ দেন।
দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে বুধবার বিকেলে তানভীরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তিনি উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়।
আজ ভোরে তাকে কুষ্টিয়ায় নিয়ে আসা হয়।
কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে আদালত চত্বরে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের হয় ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর।
কুষ্টিয়া মডেল থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান জানান, সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ১৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি মামলার রের্কড রয়েছে। মামলায় এসপি তানভীর প্রধান আসামী।
নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে। মামলার বাদী সুজন হোসেন কুষ্টিয়া শহরের মিললাইন এলাকার লালন শাহ সড়কের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
মামলার বাদী সুজন হোসেন এজাহারে উল্লেখ করেন, তার দলীয় ছোট ভাই বিএনপির সহযোদ্ধা সুজন মালিথা নিয়মিত বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে উপস্থিত থেকে নেতাকর্মীদের উৎসাহ প্রদান করতেন। যার কারণে আসামিদের কাছে সুজন মালিথা শত্রু হিসেবে পরিণত হয়। তারা সুজনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তারই জের ধরে কুষ্টিয়া জেলা শহরে অনুষ্ঠিত বিএনপির প্রোগ্রামে শেষ করে রাতে নিজ বাড়িতে চলে যায়। ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটে আসামিরা সকলে মিলে সুজনের বাসায় প্রবেশ করে এবং তাকে জোরপূর্বক তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়।
সুজন হোসেন দাবি করেন, পরবর্তীতে তিনিসহ ভিকটিমের পরিবারের লোকজন দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে জানতে পারেন যে, ঐ রাতেই ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৩০ মিনিটে কুষ্টিয়া শহরের মডেল থানাার মোল্লাতেঘরিয়া পূর্ব ক্যানালের পাড়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
সুজন এজাহারে দাবি করেন, অতঃপর তিনিসহ সুজন মালিথার পরিবারের লোকজন আসামিদের কাছে উপস্থিত হয়ে সুজন মালিথাকে হত্যার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা কোনো সদুত্তর না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে একাধিকবার উক্ত ঘটনার বিষয়ে মামলা করার চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান। ঘটনার বিষয়ে এলাকার অনেকেই অবগত আছেন বলে দাবি সুজন হোসেনের।
মামলার আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত, কুষ্টিয়া মডেল থানার সাবেক ওসি নাসির উদ্দিন, একই থানার সাবেক ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান, ওই থানার সাবেক এসআই সাহেব আলী, এসআই মোস্তাফিজুর রহমান, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, দৌলতপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান টোকন চৌধুরী, কুষ্টিয়া নাগরিক পরিষদের সভাপতি সাইফুদ্দৌলা তরুন, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহিদুল ইসলাম, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ আরিফুর হোসেন সজীব, কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৌশিক আহমেদ ওরফে বিচ্চু, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি সোহাগ আলী।
আসামীদের মধ্যে মাহবুবউল আলম হানিফ ও আতাউর রহমান আতাসহ সবাই পলাতক। কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ একই মামলায় জেলে রয়েছেন।
Leave a Reply