June 24, 2025, 1:39 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরানের জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত তার দেশ।
আজ সোমবার (২৩ জুন) রাশিয়ার মস্কোয় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। এ সময় পুতিন এসব কথা বলেন। খবর আল-জাজিরার।
বৈঠকে পুতিন বলেন, এটি ইরানের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে সংঘটিত আগ্রাসন। দেশটিতে চলমান হামলাগুলোকে ‘অন্যায় ও অযৌক্তিক’ অভিহিত করে তিনি বলেন, রাশিয়া ইরানি জনগণকে সহায়তা দেয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে আরও সহায়তার অনুরোধ জানাতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচিকে মস্কো পাঠিয়েছেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় সামরিক হামলা চালায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েল প্রকাশ্যে খামেনিকে হত্যার বিষয়েও মন্তব্য করেছেন এবং ইরানে সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন—যা রাশিয়ার দৃষ্টিতে মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
রয়টার্সকে একটি সূত্র জানিয়েছে, আরাকচি খামেনির একটি চিঠি নিয়ে মস্কো যান যেখানে রাশিয়ার কাছ থেকে আরও সরাসরি সমর্থনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সূত্রগুলো জানায়, ইরান এখন পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষ থেকে খুব একটা কার্যকর সহায়তা পায়নি এবং আরও সক্রিয় সমর্থন প্রত্যাশা করছে। তবে তারা কী ধরনের সহায়তা চায়, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাসকে আরাকচি জানান, বর্তমান মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে ইরান ও রাশিয়া ঘনিষ্ঠভাবে তাদের অবস্থান সমন্বয় করছে।
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইরানের মিত্র এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে পশ্চিমাদের সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে। তবে ইউক্রেনে চতুর্থ বছরে গড়ানো যুদ্ধে ব্যস্ত পুতিন আপাতত ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়াতে আগ্রহী নন।
পুতিন বারবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণ পরমাণু শক্তির অধিকার নিশ্চিত করে একটি সমাধানের পথে এগোতে বলেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল রাশিয়ার বিশেষজ্ঞদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিয়েছে—যারা ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নতুন দুটি চুল্লি নির্মাণে সহায়তা করছে।
রাশিয়া যদিও ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইরানের কাছ থেকে অস্ত্র কিনেছে এবং চলতি বছর ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি করেছে, তবুও দুই দেশের সম্পর্ক ইতিহাসে বহুবার টালমাটাল হয়েছে। এই চুক্তিতে কোনো পারস্পরিক প্রতিরক্ষা ধারা নেই।
রাশিয়ার অভ্যন্তরে এখন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ইউক্রেনকে সমর্থন দিচ্ছে—সেভাবে ইরানকেও সমর্থনের দাবি উঠছে, যার মধ্যে রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্যাটেলাইট গোয়েন্দা সহায়তা।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রোববার রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে যাতে মধ্যপ্রাচ্যে অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার জাতিসংঘ দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, “আবারও আমাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের রূপকথায় বিশ্বাস করতে বলা হচ্ছে, যেন আবারও মধ্যপ্রাচ্যের কোটি মানুষের ওপর দুর্ভোগ চাপিয়ে দেওয়া যায়। এটি প্রমাণ করে, ইতিহাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই শেখেনি।”
Leave a Reply