November 13, 2025, 1:09 pm

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দুই রেঞ্জের প্রায় ১,৫০০ পুলিশ সদস্যের অংশগ্রহণে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ নামে একটি বিশেষ যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়েছে পদ্মা নদীর চরের চার জেলা—রাজশাহীর বাঘা, পাবনার বেড়া ও ঈশ্বরদী, নাটোরের লালপুর এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে।
অভিযান চলাকালে পুলিশ ড্রোন ব্যবহার করে বিশাল কাশবন, কলাবাগান ও জঙ্গলঘেরা চরাঞ্চলে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের অবস্থান শনাক্ত করে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আকাশপথে নজরদারির জন্য একাধিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়।
১৪টি নৌকায় করে ১০টি দলে বিভক্ত হয়ে পুলিশ এই অভিযান চালায়। সাথে ছিল পুলিশের বিশেষ মোটরসাইকেল স্কোয়াড। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে পাঁচটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। অভিযান শেষ হয় বিকেল ৪টায়।
রাজশাহী রেঞ্জের অধীনে ১,২০০ পুলিশ সদস্য এই অভিযানে অংশ নেন, আর খুলনা রেঞ্জের অধীনে কুষ্টিয়ায় অংশ নেন আরও ৩০০ পুলিশ সদস্য। পুরো অভিযানের সমন্বয় করা হয় রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে।
সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। এসব ঘটনায় জড়িত হিসেবে ‘কাকন বাহিনী’ নামে একদল সন্ত্রাসীর নাম উঠে এসেছে। পুলিশের তথ্যমতে, এই বাহিনী নির্বিচারে গুলি, হত্যা, ফসল ও বালু লুট, অপহরণ এবং চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িত।
গত ২৭ অক্টোবর পদ্মার চরে ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে কাকন বাহিনীর গুলিতে তিনজন কৃষক নিহত হন। ওই দিনই কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় বাহিনীর প্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ কয়েকজনের নামে মামলা হয়।
পুলিশ জানায়, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলায় এই বাহিনীর বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।
রাজশাহী/
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, অভিযানে পাঁচটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। কাকন বাহিনীর ২১ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নাটোর/
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পদ্মার চরাঞ্চলের সন্ত্রাস দমনে নদী ও স্থলভাগে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানটি পরিচালিত হয় লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চর দিয়াড় বাহাদুরপুর, চর জাজিরা ও চর লালপুর এলাকায়।
কুষ্টিয়া/
খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শেখ জয়নুদ্দীনের নেতৃত্বে এবং কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের অংশগ্রহণে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, চরাঞ্চলে কাকন বাহিনীসহ সক্রিয় সন্ত্রাসী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে, তবে অধিকাংশই কাকন বাহিনীর সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজন হলে অভিযান অব্যাহত থাকবে।