November 13, 2025, 1:13 pm

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলইন/
১৫ মাস ধরে বন্ধ থাকা ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃদেশীয় ট্রেন যোগাযোগ শিগগিরই চালু হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত আন্তঃদেশীয় ট্রেন সেবা পুনরায় চালুর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।
২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মৈত্রী এক্সপ্রেস (ঢাকা-কলকাতা), বন্ধন এক্সপ্রেস (খুলনা-কলকাতা) ও মিতালী এক্সপ্রেস (ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি) ট্রেন তিনটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই থেকে ভারত-বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ কার্যত স্থবির হয়ে আছে।
ভারতীয় হাইকমিশনের লিখিত বার্তায় জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে এবং যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রার নিশ্চয়তা পাওয়া গেলে তবেই ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু করা হবে। হাইকমিশন বলছে, “যাত্রী ও রেলকর্মীদের নিরাপত্তা আমাদের জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই আন্তঃদেশীয় ট্রেন চলাচল পুনরায় চালুর পথ তৈরি হবে।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশ রেলওয়ে মনে করে, পরিস্থিতি এতটা অস্থির নয় যে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। রেলওয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের দৃষ্টিতে আন্তঃদেশীয় রেলসেবা কেবল পরিবহন নয়, এটি দুই দেশের সম্পর্কের প্রতীক। নিরাপত্তার চেয়ে কূটনৈতিক আস্থা ও সহযোগিতার বার্তাটাই এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে ইতিমধ্যে দুই দফায় ভারতের রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছে, কিন্তু কোনো উত্তর মেলেনি। সর্বশেষ গত ৬ অক্টোবর রেল মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ৩৮তম আন্তঃসরকার রেল সভা (IGRM) প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে আবারও ভারতকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী সাধারণের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। নিয়মিত যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিমান বা বাসযোগে ভ্রমণের তুলনায় আন্তঃদেশীয় ট্রেন ছিল স্বল্পমূল্য ও আরামদায়ক একটি বিকল্প। তারা আশা করছেন, দুই দেশ দ্রুতই সমাধানের পথে এগোবে।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য, সীমান্ত সহযোগিতা ও যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূলে এলে পুনরায় আন্তঃদেশীয় ট্রেন চালুর সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।