December 22, 2025, 7:15 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, টানা দুই দিন সূর্যের দেখা নেই ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কমের মধ্যেও রপ্তানি ও রাজস্ব বৃদ্ধি লাখো মানুষের শ্রদ্ধায় শেষ বিদায়/ চিরনিদ্রায় শহীদ ওসমান হাদি কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিসে অগ্নিকাণ্ড, তদন্তে প্রশাসন শোকবার্তায় জামায়াত /আওয়ামী লীগের প্রতিবিপ্লবের অপচেষ্টা রুখে দেওয়ার কারিগর ছিলেন হাদি’ মব সন্ত্রাসে জাতি বিভক্ত, দায় সরকারের: মির্জা ফখরুল সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান সরকারের জুলাই–অক্টোবরে বাণিজ্য ঘাটতি ৭.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে অন-ডিউটি চিকিৎসকের মোবাইল গেম খেলা/ দুদকের অভিযানে মিলল সত্যতা, আরও অভিযোগ আজ মহান বিজয় দিবস/বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সংগ্রাম ও বিজয়ের গৌরবগাথা

ঝিনাইদহে কেয়া হত্যা/ব্যর্থ প্রেমের প্রতিশোধ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা

দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ/
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর গ্রামের গৃহবধু কেয়ার হত্যাজট উন্মোচিত হয়েছে বলে পুলিশ মনে করছে। হত্যাকান্ড ও লাশ উদ্দারের ৩ মাস পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। পুলিশ বলছে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে নববধূ কেয়ার লাশ মাটিচাপা দেয় মিলন ও তার সহযোগীরা। মিলন ছিল কেয়ার ব্যর্থ প্রেমিক। প্রতিশোধ নিতেই সে হত্যাকান্ড ঘটায়।
এ ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো কালীগঞ্জের ত্রীলোচনপুর গ্রামের সলেমান হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (২৬), একই গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে ইসরাফিল (২৫) ও আজগর আলীর ছেলে আজিম (২৬)।
গত ১৩ মার্চ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর গ্রামের একটি রাস্তার পাশে চুলের ক্লিপ, মাথার চুল ও একটি স্যান্ডেল দেখতে পাওয়া যায়। সূত্র ধরে ওই গ্রামেরই একটি মাঠের মধ্যে মাটিতে পুঁতে রাখা গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশটি কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রীলোচনপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের মেয়ে কেয়া খাতুনের বলে শনাক্ত করে স্বজনরা। কেয়া ১৭ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।
লাশ উদ্ধারের পর হত্যার মোটিভ উদ্ধার ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে কোনও আলামত মেলে না। ফলে তদন্তে তৈরি হয় নানা জটিলতা। পুশিল গবেষণা ভিত্তিক তদন্তের দিকে যায়। কেয়ার বিয়ের আগে ও পরে নানা বিষয়ে পর্যালোচনা শুরু করা হয়।
এ পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে নিহত কেয়ার সঙ্গে একই গ্রামের সলেমানের ছেলে মিলন হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরিবার থেকে একই উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাইক্রো চালক সাবজাল হোসেনের সঙ্গে কেয়ার বিয়ে দেওয়া হয়। মিলন হোসেন প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে এমন সন্দেহে ছদ্মবেশে অভিযানে নামে পুলিশ। অভিযানের এক পর্যায়ে ১৬ মার্চ জীবননগরের হাসাদাহ এলাকা থেকে মিলনকে আটক করা হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মিলন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়। মিলন গ্রেফতার হওয়ার পর আসামি ইসরাফিল ও আজিম গা ঢাকা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতে থাকে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসরাফিলকে ২৭ মার্চ গ্রেফতার করলে সেও হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। দীর্ঘ প্রায় ৩ মাসের চেষ্টায় গত মঙ্গলবার (০২ জুন) কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা এলাকা থেকে আজিমকে গ্রেফতার করা হয়। সেও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, মামলাটি ছিল ক্লুলেস। ক্লুলেস মামলা তদন্ত করে প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করা অনেক কঠিন বিষয়। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল খায়ের কঠোর পরিশ্রম, দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে মামলাটি তদন্ত করে প্রকৃত ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
হত্যার দিনের ঘটনার বিষয়ে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন আসামিদের আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত হয় ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮ টার দিকে কেয়া খাতুনকে মিলন তার বাবার বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে প্রথমে মিলন তাকে ধর্ষণ করে। পরে একে একে আজিম ও ইসরাফিল তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর মিলন বাঁশের লাঠি দিয়ে কেয়ার মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। সেখানে পাশের বাড়ি থেকে একটি কোদাল এনে রাস্তার পাশে মাটি চাপা দিয়ে কলাগাছ ও কলাগাছের পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যায়।
তিনজনই এ কাজে প্রত্যক্ষ অংশ নেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net