March 9, 2025, 8:21 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
মাগুরার সেই শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক, মেডিকেল বোর্ড গঠন বাংলাদেশে সকল সমস্যার সমাধানে গণতান্ত্রিক উপায়ে জোর ভারতের আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ/একটি জাতি যেভাবে ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি পায় জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা মনিটরিং-এ নতুন টাস্কফোর্সের কমিটি পুনর্গঠন আবরার ফাহাদ ছিলেন ভারতীয় আগ্রাসনবাদী এদেশীয় স্বৈরাচার উৎখাত আন্দোলনের প্রথম শহীদ : আসিফ মাহমুদ ২৬ বছর পরও উদীচী হত্যাকান্ডের বিচার অধরা, যশোর ও কুষ্টিয়ায় নিহতদের পরিবারের আহাজারি রোজার কারনে ১ দিনের আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হবে লালন স্মরণোৎসব এখনো ছাপাই হয়নি ৩ কোটি পাঠ্যবই ! যবিপ্রবির সাবেক দুই উপাচার্য ড. সাত্তার ও ড. আনোয়ারসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা মেহেরপুরে ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ৮ লাখ টাকা লুট

বন্ধ হচ্ছে ৭২ বছরের পুরোন চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জসহ অলাভজনক ও নিষ্ক্রিয় ৪ স্থলবন্দর

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত তিনটি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর সম্পূর্ণ এবং একটি স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের গঠন করা একটি যাচাই কমিটি এ সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্থলবন্দর, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর এবং রাঙ্গামাটির তেগামুখ স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন নেই মর্মে সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ছাড়া হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কেদারকোটে নির্মিত স্থলবন্দরের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে কমিটি।
এর আগে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময়, বিগত সরকারের আমলে নির্মিত দেশের অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন বিভিন্ন স্থলবন্দরসমূহের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আটটি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর কার্যকর/অকার্যকর-এর বিষয়ে যাচাইয়ের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
স্থলবন্দরগুলো পরিদর্শন শেষে প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনা করে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি। ওই প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বাণিজ্য সম্ভাবনা বিবেচনায় নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্থলবন্দর, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর এবং রাঙ্গামাটির তেগামুখ স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন নেই মর্মে সুপারিশ প্রদান করেছে। এ ছাড়া, হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কেদারকোটে নির্মিত স্থলবন্দরের ভারতীয় অংশে কোনো অবকাঠামো ও সড়ক না থাকায় বন্দরটির অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ রাখা যেতে পারে মর্মে সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে ময়মনসিংহ জেলার গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরের দুটি স্থানের পরিবর্তে একটি স্থানে স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু রাখার সুপারিশ করেছে কমিটি।
সুপারিশে বলা হয়েছে, শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর- কেন্দ্রিক গতিশীল অর্থনৈতিক কার্যক্রম চলমান আছে। স্থলবন্দরটির কার্যক্রম আরও গতিশীল করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। জামালপুরের ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং পূর্বে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম গতিশীল ছিলো এবং বন্দর-কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম দৃশ্যমান। বিনিয়োগ বিবেচনায় ন্যূনতম জনবল দিয়ে এই বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া, রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দরে বিদ্যমান ব্যবস্থায় রেল পথে আমদানি-রপ্তানি চালু রাখা যেতে পারে। ইমিগ্রেশন সুবিধা চালুর জন্য ভারতকে অনুরোধ করা যেতে পারে।
দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর/
স্থানীয়রা জানান, দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দর চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার দৌলৎগঞ্জ সীমান্তে অবস্থিত। আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার অন্তর্গত মাজদিয়া সীমান্ত এই বন্দরের বিপরীতে অবস্থিত। এই বন্দরের রুট দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া সড়ক যোগাযোগ। দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দর থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব মাত্র ২৫৬ কিলোমিটার। উভয় দেশের সীমান্ত পর্যন্ত চওড়া পাকা রাস্তা রয়েছে। বন্দরটি চালু হলে আমদানি-রফতানি কাজে পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় ও দ্রুত সময়ে পণ্য পরিবহন সম্ভব হবে। দেশের অর্থনৈতিক ভিত মজবুতের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নে বন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দরের সড়ক যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সব সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে।

দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি গোলাম মোর্তূজা জানান, ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত দৌলতগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দরটি শুল্ক স্টেশন হিসেবে চালু ছিলো। কিন্তু ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় শুল্ক স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৯৭২ সালে শুল্ক স্টেশনটি ফের চালুর নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে আবারো এটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আবার শুল্ক স্টেশনটি চালুর প্রজ্ঞাপন জারি করে বন্দরটিতে ১৯টি পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ১১ জুন আরেকটি প্রজ্ঞাপনে শুল্ক স্টেশন কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে নির্দেশ দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। সেটাও আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগরের দৌলতগঞ্জকে স্থলবন্দর (স্থল কাস্টমস স্টেশন) হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এখন চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের পর দেখার বিষয় কত দিনে তা বাস্তবায়ন হয়। তিনি আরও জানান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এর আগে ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই জীবননগর দৌলতগঞ্জ শুল্ক স্টেশনটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছিলো। সে সময় একই বছর ২৪ আগস্ট তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী মোহাম্মদ শাজাহান খাঁন চালুর অপেক্ষায় থাকা এই বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তরও উদ্বোধন করে গিয়েছিলেন। এরপর ২০১৪ সালের ৪ জুন তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী মোহাম্মদ শাজাহান খাঁন ও তৎকালীন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পংকজ শরন আবারো বন্দরের জন্য প্রস্তাবিত জায়গা পরিদর্শন করেন। সেই সময় এই বাংলাদেশ-ভারত সরকারের দুই ঊর্ধŸতন কর্তা দ্রুত সময়ে বন্দরটি চালুর ঘোষণা করলেও পরে সে উদ্যোগ থমকে যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net