June 18, 2025, 12:22 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
২০২৩ সালে নেয়া সিদ্ধান্তের আলোকে একটি তিনদেশীয় চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে নেপাল। ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে নেপাল এই প্রথম ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করছে, যা দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ (পিজিবি) সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। পিজিবি দৈনিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার রাত ১২টা থেকে এই বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে। আজ রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় ৩৮ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসছে।
এদিকে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি খোজিন।
নেপালের বিদ্যুৎ/
২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের ভারত সফরের সময় এই বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে সময় তিন দেশ আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সংযোগ জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হবে। নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে, এই বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ইউনিট ০ দশমিক ০৬৪ ডলার বা ৬ দশমিক ৪ সেন্ট।
এরই ধারাবাহিকতায়, ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি সই হয়। এতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল–নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথোরিটি (এনইএ), বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম (এনটিপিসি)।
ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, নেপাল ২০২৫ সাল থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরের ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। এর অর্থ হলো, বছরের একটি নির্দিষ্ট শুষ্ক মৌসুমে নেপালের এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।
রুপপুরের বিদ্যুৎ/
চলতি বছরের শেষ নাগাদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি খোজিন। রাশিয়া দিবস উপলক্ষে গতকাল ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ বছর রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ের ৮০ বছর উদযাপন করছে। একই সঙ্গে সোভিয়েত পারমাণবিক শিল্প প্রতিষ্ঠারও ৮০ বছর। এ গৌরবময় সময়ে রূপপুর প্রকল্পের অগ্রগতি আমাদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।’
তিনি জানান, রুশ ও বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের যৌথ প্রচেষ্টায় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রথম ইউনিট উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রূপপুর প্রকল্প শুধু প্রযুক্তিগত নয়, রাশিয়া-বাংলাদেশ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ জ্বালানি খাতে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা ‘রোসাটম’-এর সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, যার প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং বর্তমানে প্রকল্পের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলক চালুর প্রস্তুতিতে রয়েছে।
Leave a Reply