November 7, 2025, 3:05 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
পাখির খাদ্যের আড়ালে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হলো ২৪,৯৬০ কেজি পপি সিড দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে শীতের আগমন, প্রথম শৈত্যপ্রবাহ আসবে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল হবে: সেনাবাহিনী অনার্স ও ডিগ্রি পাস কোর্স/ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর শূন্য থাকে লক্ষাধিক আসন কুষ্টিয়ার ৪টি আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা গোয়ালন্দে শাটল ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত, ট্রেন চলাচল বন্ধ নেতৃত্বে কুষ্টিয়ার সেতু/ “আমার ব্যাংক” নামে ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার উদ্যোগ ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমলো ২৬ টাকা আবারও জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত ডা. শফিকুর রহমান কুষ্টিয়া চেম্বারের বার্ষিক সাধারণ সভা ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

এইচএসসিতে ইংরেজি: দুর্বল ভিত্তি থেকে ফল বিপর্যয়

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দেশের স্কুল পর্যায়ে ইংরেজি শিক্ষা প্রাথমিক থেকেই বাধ্যতামূলক। শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার আগে ১২ বছর ধরে ইংরেজি পড়তে হয়। তবে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে এখনও শেখার পদ্ধতি মুখস্থ নির্ভর। যা মুখস্থ করা হয়, তা জীবন থেকে অভিজ্ঞতা নেওয়ার বদলে কেবল মনে থাকে না। এ কারণে এক যুগ ধরে পড়াশোনা করলেও অনেক শিক্ষার্থীর ইংরেজিভীতি কাটে না।
এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে এই দুর্বলতার প্রকৃত প্রতিফলন দেখা গেছে। ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ইংরেজিতে ফেল করেছে। ইংরেজিতে পাশের হার ৭৭ শতাংশ থেকে কমে ৫৮ শতাংশে নেমেছে, যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। শিক্ষাবিদরা বলছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই অদক্ষ শিক্ষকের কারণে শিক্ষার্থীদের ইংরেজির ভিত্তি দুর্বল হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলোর ৮৪ শতাংশের ইংরেজি শিক্ষকেই স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেই।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ২০২৩ সালের জরিপে দেখা গেছে, প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ১৬ শতাংশ বইয়ের বর্ণও পড়তে পারে না। ৮৪.১৫ শতাংশ ছেলে এবং ৮২.৮৬ শতাংশ মেয়ে তিনটি বা তার কম ভুল সহ একটি কাহিনী সাবলীলভাবে পড়তে পারে না। সরকারি ও গবেষণামূলক প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে, ১২ বছর ইংরেজি পড়ার পরও অনেকে সাধারণ কথোপকথন চালাতে পারেন না। অষ্টম শ্রেণিতে ভালো ও খুব ভালো শিক্ষার্থীর হার ৪৬ শতাংশ, দশম শ্রেণিতে ৬১ শতাংশ।
গত পাঁচ বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় ইংরেজিতে পাশের হার ধারাবাহিকভাবে কমছে। ২০২১ সালে এটি ছিল ৯৫.২৬ শতাংশ, ২০২৫ সালে নেমে এসেছে মাত্র ৫৭.১২ শতাংশে। ইংরেজিতে ফেলের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক বলেন, শিক্ষার্থীদের ইংরেজি-ভীতি, শিখন পদ্ধতির জটিলতা এবং শিক্ষকের অভাবই খারাপ ফলাফলের মূল কারণ। শিক্ষকের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, বেতন ও মর্যাদাও এ সমস্যার সঙ্গে জড়িত।
বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান ও আইসিটিতে ফল সবচেয়ে খারাপ। ইংরেজিতে ফেলের হার ৩৮.৮ শতাংশ, হিসাববিজ্ঞানে ৪১.৪৬ শতাংশ। যশোর বোর্ডে ইংরেজিতে পাশের হার মাত্র ৫৪.৮২ শতাংশ। বোর্ডগুলো জানিয়েছে, ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে নম্বর পাওয়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে সহানুভূতির নম্বর বা অতিরিক্ত নম্বরের প্রথায় শিক্ষার্থীরা সীমিত প্রস্তুতিতেও পাশ পেত। এবার তা বন্ধ করে কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া, মফস্বলের কলেজে অনলাইন বা ডিজিটাল কনটেন্টভিত্তিক পড়াশোনা নেই, শিক্ষকের ঘাটতি এবং দুর্বল লেখনশৈলীও ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
একজন পরীক্ষা নিরীক্ষক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্রে দেখা যায় অর্থহীন ও অসংলগ্ন লেখা। সঠিক বাক্য গঠন ও মৌলিক ব্যাকরণ নেই। বানান ভুল এত বেশি যে পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে যায়। অনেক সময় মনে হয়, তারা কখনো কলেজে যায়নি, কোনো বই পড়েনি। শিক্ষার্থীরা ইংরেজিকে বোঝার বদলে মুখস্থ বিদ্যা দিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার চেষ্টা করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net