December 26, 2024, 10:49 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতুর প্রতিরক্ষা বাঁধের ধস আরো বড় হয়েছে। পানির ওপরের ২০টিরও বেশি লাইনের অন্তত ৭০টি করে ব্লক নদীগর্ভে চলে গেছে। সবমিলিয়ে পানির ওপরে দৃশ্যমান দেড় হাজার ব্লক ধসে গেছে। পানির নিচে আরো ব্লক ধসে যেতে পারে। ধসে যাওয়া জায়গা ঘুরে বড় ধরণের গর্তও দেখা গেছে। পানি অনেকটা নিচে নেমে গেলেও ধস এখনো থামেনি। প্রতিদিনই নতুন নতুন ব্লক ধসে যাচ্ছে বলেন স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ হোসেন। স্বপ্নের সেতু এবং তীরবর্তী হরিপুর জনপদ নিয়ে চিন্তিত মাসুদসহ স্থানীয়রা। এখনি জিও ব্যাগ ফেলে ধস নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানান তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা হাত দিয়ে দেখিয়ে দেন ধসে যাওয়া ব্লকের নিচে কোন জিও ব্যাগ নেই। শুধু বালুর ওপর একটি সিনথেটিক অ্যাপ্রোন দিয়ে ব্লক বসানো হয়। এ কারণেই মাত্র তিন বছরের মধ্যেই এই বাঁধ ধসে যাচ্ছে বলেন তারা।
মাসখানেক আগে সেতুর ১০০মিটার ভাটিতে হরিপুর প্রান্তে প্রতিরক্ষা বাঁধে প্রথমে ফাটল দেখা দেয়। এরপর একে একে সিমেন্টের ব্লক খুলে নদীতে চলে যেতে থাকে। একই সঙ্গে ধস সেতুর কাছাকাছি আসতে থাকে। সেতুর প্রায় ৮০ মিটারের মধ্যেই বাঁধ থেকে নদীতে নেমে গোছল করার সিঁড়ির পুরোটাই ধসে গেছে।
কুষ্টিয়া শহর লাগোয়া গড়াই নদীর ওপর শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে এই প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর- এলজিইডি। এলজিইডির কুষ্টিয়া নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান মণ্ডল এতোদিন পরেও একই কথা বলেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রকৌশলীদের মতামত এবং এলজিউিডির নিজস্ব রিপোর্ট যুক্ত করে প্রধান প্রকৌশলী বরাবর বিশেষজ্ঞ টিম চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোন জবাব না আসায় সংস্কার কাজ শুরু করতে পারছেন না বলেন ম-ল। কেন তিন বছরের মধ্যেই এ রকম একটি প্রতিরক্ষা বাঁধ ধসে গেল সে প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান বলেন, ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ টিম আসলে ভাল বলতে পারবে। তবে, আপাত দৃষ্টিতে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে- যেখানে ধস হয়েছে ওই জায়গা বরাবর নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি ড্রেজার দাঁড়ানো ছিলো তিন দিন। সেসময় স্থানীয়রা বুদবুদ দেখতে পান, তারপরই ধস শুরু হয় বলেন মণ্ডল। তিনি বলেন, স্কাউরিং হয়ে নিচ থেকে বালু সরে গিয়ে এই জায়গায় ধস শুরু হয়। অন্য কোন জায়গায়তো এমনটি হয়নি যুক্তি দেখান নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি দাবি করেন, প্রতিরক্ষা বাঁধের ডিজাইনে নদীর বেডে নদীর দিকে ২মিটার এবং বাঁধের দিকে দেড় মিটার করে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। কিন্তু ধসে যাওয়া ব্লকের নিচে কোন জিও ব্যাগ দেখা যাচ্ছেনা কেন? এ প্রশ্নের জবাবে জাহিদুর রহমান মণ্ডল বলেন, স্কাউরিংএ বালুর বস্তা নদীতে সরে যেতে পারে।
এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আখতার অ্যাসোসিয়েট এ সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬০৪ মিটার, প্রস্থ ৬ দশমিক ১ মিটার। এটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৭৮ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়।
Leave a Reply