August 20, 2025, 9:27 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
২০২৬ সালে তা নবায়ন হওয়ার কথা/গঙ্গা চুক্তিতে থাকতে চায় তৃণমূল, নেপথ্যে কি? আমদানি শুরুর পর দাম বাড়েনি পেঁয়াজের বেসরকারি পর্যায়ে ১০ লাখ টন ডাল ও চিনি আমদানি অনুমোদন কুষ্টিয়ায় কারাগারে হাজতির মৃত্যু কুষ্টিয়ায় পদ্মা ও গড়াইয়ে পানি কমলেও দৌলতপুরে অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দি কুষ্টিয়া শাহিন ক্যাডেট স্কুল/ ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল রেসিং খেলতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যু ঝিনাইদহে সীমান্ত অতিক্রমের অভিযোগে ১৭ জন আটক রাজশাহীতে একই পরিবারের চারজনের রহস্যজনক মৃত্যু র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে কুষ্টিয়ায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার

২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত, প্রথম রাজশাহীতে দ্বিতীয় খুলনা

দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলছে। ভারতীয় ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে। ধরনটি ছড়িয়ে পড়ছে অন্য জেলাগুলোতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের দিক থেকে ঢাকাকে ছাড়িয়ে গেছে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ। সংক্রমণে এতদিন ঢাকা বিভাগ শীর্ষে ছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগে ৮১৫ জন। খুলনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৭৮ জন ও ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছে ৫১৩ জন। সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। শয্যা সংকটে রোগী ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না কোনো কোনো হাসপাতালে। জেলা-উপজেলা শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও যশোরের অবস্থা উদ্বেগজনক।

 

 

রাজশাহী বিভাগে শনাক্ত হওয়া ৮১৫ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ রোগী রাজশাহী জেলায়- ৩৫৩ জন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গত চব্বিশ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১২ জন। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালটির নির্ধারিত ২৭১ বেডের বিপরীতে ভর্তি ছিলেন ২৯০ জন রোগী।

 

 

জয়পুরহাটে গত বুধবার ৪৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ১০১ জন। বাগেরহাটে ২৪ ঘণ্টায় ৬৩ জন, দিনাজপুর সদর উপজেলায় ৪৩ জন, নওগাঁয় ৯৪ জন, যশোরের অভয়নগরে ১৩ জন, নাটোরে শনাক্ত হয়েছেন ৬২ জন।

 

 

এদিকে, খুলনার পাইকগাছা পৌরসভায় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে সাতদিনের লকডাউন, চলবে ১৬ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত। শয্যা সংকটে খুলনা করোনা হাসপাতালে রোগী ভর্তি স্থগিত করা হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় সাতক্ষীরায় দ্বিতীয় দফায় ১৭ জুন পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। এ জেলায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৪৮ জন।

 

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগীর জায়গা না হওয়ায় শয্যা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও রোগী ধরছে না। এ অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৫ নম্বর ওয়ার্ডকেও করোনা ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের কাজ শুরু করেছে। হাসপাতালটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১৫ জন।

 

 

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হয়েছেন ৪২ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১৮ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৬, নওগাঁর সাত ও নাটোরের একজন।

 

 

শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সাতদিনের সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউন চলবে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় সার্কিট হাউসে এক জরুরি সভায় এ ঘোষণা দেন বিভাগীয় কমিশনার ড. হুমায়ুন কবির।

 

 

খুলনা করোনা হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানিয়েছেন, ১০০ শয্যার এ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকালে রোগী ভর্তি ছিলেন ১২৬ জন। পরে আরো চারজন ভর্তি হন। এখন শয্যা খালি না থাকায় রোগী ভর্তি করা সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার খুলনা মেডিকেল কলেজে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১০৯ জন।

 

 

জয়পুরহাট ও পাঁচবিবি পৌর শহরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে পরের দিন ভোর ৬টা পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

 

 

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সংক্রমণের হার কিছুটা কম। মোংলা ও রামপাল উপজেলায় একজন করে মারা গেছেন।

 

 

নওগাঁয় গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২৬৪ ব্যক্তিকে। জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৬ জন।

 

 

 

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে সীমান্তের সাত জেলায় মে মাসে লকডাউনের সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিটি। কিন্তু সাতক্ষীরা ছাড়া আর কোনো জেলায় লকডাউন দেয়া হয়নি। এর বাইরে কয়েকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ে লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে সুপারিশ না করলেও সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আগেই লকডাউন দেয়া হয়।

 

 

 

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকাতেও ১৭ জুন পর্যন্ত সর্বাত্মক লকডাউন দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী সীমান্ত জেলাগুলোতে লকডাউন কার্যকর না করার সমালোচনা করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটি আরো ১২ দিন আগে সীমান্তের সাতটি জেলায় লকডাউনের সুপারিশ করেছিল।

 

 

 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ভারতের সঙ্গে সীমান্তবর্তী জেলাগুলো নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন। ওই জেলাগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কোভ্যাক্সের কাছে এ জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী টিকা চাওয়া হয়েছে। কারণ ফাইজারের যে টিকা এসেছে, তা ঢাকার বাইরে সংরক্ষণের সুবিধা নেই। একই সঙ্গে সুরক্ষাসামগ্রী ও ওষুধপত্র পাঠানো হবে। প্রয়োজন হলে জেলাগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দুই হাজার ৫৭৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা গত দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে, গত ২৮ এপ্রিল ৯৫৫ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আট লাখ ২০ হাজার ৩৯৫ জনে পৌঁছাল। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪০ জন নিয়ে ১২ হাজার ৯৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বিপরীতে সংক্রমিত আরো দুই হাজার ৬১ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর মধ্য দিয়ে সাত লাখ ৫৯ হাজার ৬৩০ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net