March 14, 2025, 1:15 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দেশের বাজারে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চালের দাম বাড়ছে। এ নিয়ে খোদ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অস্বস্তিতে রয়েছে। পত্র-পত্রিকা এ নিয়ে লিখলেও সরকার প্রথম দিকে নজর দুরে রাখে। এখন সরকার স্বীকার করছে পরিস্থিতি। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনেই এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই দর গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে দুই থেকে চার টাকা বেশি। মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা ও সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেট ৮৪ টাকায় ছুঁয়েছে। যদিও খুচরা বাজারে মানভেদে আরও বেশি দরে চাল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আমন সংগ্রহ অভিযানও একেবারেই ব্যর্থ বলা যায়। এ পরিস্থিতিতে অন্তর্র্বতী সরকার আগামী বোরো মৌসুমের জন্য অপেক্ষা না করে ১০ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠক শেষে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশে খাদ্যশস্যের মজুত ও সরবরাহ ঠিক রাখতে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল-গম আমদানি করা হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আউশ ও আমন সংগ্রহে ঘাটতি হয়েছে। এখন সামনে আছে বোরো ফসল। আশা করছি, বোরোতে ফলন ভালো হলে আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারব। তবে এজন্য অপেক্ষা করব না। আমাদের বিদেশ থেকে আমদানি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ধান সংগ্রহে যেমন ময়েশ্চার চাওয়া হয়, সেটা কৃষকরা দিতে পারে না। এজন্য অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের ক্ষেত্রে ধান সংগ্রহ কম হয়। এছাড়া মিলগুলো কাঁচা ধান নিয়ে যাচ্ছে। কর্পোরেট মিলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে পারা যাচ্ছে না। তাই মজুত ও সরবরাহ ঠিক রাখতে ১০ লাখ টন চাল, গম আমদানি করা হবে। আশা করছি, যে মজুত রয়েছে তাতে কোনো ঘাটতি হবে না। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন চাল ও গম মজুত আছে। এর মধ্যে ৮ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ৩ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন গম বলে জানান তিনি।
চাল আমদানির সোর্স হবে মালটিপল জানিয়ে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করা হবে। প্রতিবেশী দেশ থেকে আমদানি করলে সহজে আনা যায়, দামও কম পড়ে। তবে প্রতিবেশীর পাশাপাশি অন্য দেশে দাম একটু বেশি হলেও আমরা আমদানি করছি। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে চালের দাম বাড়ছে না। চালের দাম আরও কমলে খুশি হব।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে ১ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। ২২ হাজার টন চাল এরই মধ্যেই চলে এসেছে। বাকি চাল আসবে ভিয়েতনাম, ভারত ও পাকিস্তান থেকে। এছাড়া, ৩ লাখ টন গম আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ২ লাখ টন গম রাশিয়া থেকে গভর্নমেন্ট-টু-গভর্নমেন্টের (জিটুজি) ভিত্তিতে ডেফার্ড পেমেন্ট আমদানি করব। আমদানি করা চালের কেজি ৫৬ থেকে ৬০ টাকা পড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যে চালটা বিদেশ থেকে আনছি এটার মান ভালো। এটা আমরা ওএমএসের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজিতে দিচ্ছি। খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ১৪ এপ্রিল বা পহেলা বৈশাখে বোরো সংগ্রহ শুরু হয়। যদি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো ধান সংগ্রহ করা যায় তাহলে আমদানির পরিমাণ কমবে। আর বোরো উৎপাদন ব্যাহত হলে চাল আমদানির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply